কলকাতা, 4 মার্চ: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে এবার মতুয়া মহাসঙ্ঘে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ তুলে রাজ্য পুলিশের ডিজিপি রাজীব কুমারকে চিঠি দিলেন তৃণমূলের মমতাবালা ঠাকুর । তাঁর অভিযোগ, মতুয়া মহাসঙ্ঘের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ‘অবৈধ’ ভাবে জমা পড়েছে কোটি টাকা । তার তথ্যপ্রমাণও রয়েছে । আর সেই বিষয়ে তদন্ত চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে চিঠি দিয়েছেন সদ্য রাজ্যসভা ভোটে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূলের এই নেত্রী ৷
সম্প্রতি তিনি ওই চিঠিটি পাঠিয়েছেন । চিঠিতে মমতাবালা লিখেছেন, আইনত ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ’ তাঁর অধীনে রয়েছে । প্রয়াত বীণাপাণিদেবী স্বাক্ষর করে তাঁকে সেই দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন । ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন’ আইন অনুযায়ী তাঁদের একটি দফতর রয়েছে । যা বর্তমানে অবস্থিত উত্তর 24 পরগনার বিধান নগর কমিশনারেটের আওতাধীন সল্টলেকে । যে কারণে একটি নির্দিষ্ট ‘প্যান’ অনুযায়ী মতুয়া মহাসঙ্ঘের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের আয়ব্যয়ের হিসেব প্রতি বছর আয়কর রিটার্ন হিসেবে জমা দেন তিনি ।
কিন্তু তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি তিনি জেনেছেন যে ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ‘অবৈধ’ ভাবে বিপুল অর্থ জমা পড়েছে । কিভাবে কোটি কোটি টাকা ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে ও তার উৎস কী, তা জানার জন্যই রাজ্য পুলিশের ডিজিপি রাজীব কুমারকে তিনি একটি চিঠি লিখেছেন । তাই ওই বিষয়ে তদন্ত চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি লিখে তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন তিনি ।
এদিকে সোমবার বিকেল 3টের সময় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন মমতাবালা ঠাকুর । সেখানেই এই বিষয়টি নিয়ে সরব হবেন তিনি । এ দিন সকালে তিনি এই নিয়ে বলেন, ‘‘গত কয়েকদিন আগে আমার নজরে আসে এক কোটি 44 লক্ষ টাকা অ্য়াকাউন্টে জমা পড়েছে । এটা নিয়ে খোঁজখবর করতে গিয়ে কয়েকটা বিষয় পাই । সেটা নিয়ে তদন্তের জন্য আমি রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের দ্বারস্থ হয়েছি ।’’
এই বিষয়ে ভবানী ভবন সূত্রে খবর, তারা একটি চিঠি পেয়েছেন । পুরো বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখার জন্য বিধাননগর কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হবে ৷ পাশাপাশি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে । যদিও এই বিষয়ে রাজীব কুমারকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি ৷ তাঁকে মেসেজ পাঠানো হলেও কোনও উত্তর আসেনি ৷
প্রসঙ্গত, ঠাকুরবাড়ির ক্ষমতার সমীকরণ মূলত দুটো ভাগে বিভক্ত । যার একদিকে রয়েছেন প্রয়াত কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুর এবং অপরদিকে রয়েছেন কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের ভাই মঞ্জুল কৃষ্ণ ঠাকুর এবং তাঁর দুই ছেলে শান্তনু ঠাকুর ওবং সুব্রত ঠাকুর ৷ সামনেই লোকসভা ভোট৷ বনগাঁ লোকসভার আবারও বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়তে চলেছেন শান্তনু ঠাকুর ৷ এই পরিস্থিতিতে শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর ভাই সুব্রত ঠাকুরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নিয়ে রাজনীতির ময়দান যে সরগরম হবে, সেটাই স্বাভাবিক ৷
আরও পড়ুন:
- সিএএ নিয়ে দিনকয়েকের মধ্যেই ভোলবদল শান্তনুর, 'মিথ্যাবাদী' বলে আক্রমণ মমতাবালার
- মোদি-শাহের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শান্তনুর সাসপেনশন চাইলেন মমতাবালা ঠাকুর
- নাগরিকত্ব ইস্যুতে বিজেপি'কে ফের আক্রমণ মমতাবালা ঠাকুরের