কলকাতা, 7 ডিসম্বর: বাইপাস থেকে খানিকটা ভিতরে ঢুকলেই কলকাতা পুরনিগমের 108 নম্বর ওয়ার্ডের গুলশান কলোনি ৷ আর তার লাগোয়া 74 একর খাস জমি এবার মাপজোক করে বোর্ড বসালো রাজ্যে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর ৷ অভিযোগ, এই ওয়ার্ডের 12 নম্বর মাদুরদহ মৌজার 441 নম্বর দাগের বিপুল পরিমাণ জমি জবর দখল হয়ে গিয়েছে ৷
সেই অভিযোগের পরেই জমি পুনরুদ্ধারে নেমেছে প্রশাসন ৷ খালি পড়ে থাকা বাকি খাস জমি জরিপ করে সরকারি বোর্ড লাগানো হয়েছে ৷ এর পাশাপাশি জোকা এলাকার আরও একটি খাস জমির দখল নিয়েছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর ৷
108 নম্বর ওয়ার্ডে খাস জমি পুনরুদ্ধারে নামল ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর ৷ (ইটিভি ভারত) জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে আনন্দপুর থানার পুলিশ, রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক এবং কলকাতা পুরনিগমের ল্যান্ড অ্যান্ড সার্ভেয়ার বিভাগের কর্মীরা গুলশান কলোনি লাগোয়া ওই খাস জমিতে পৌঁছয় ৷ সেই জমি জরিপ শুরু করে ৷ অভিযোগ উঠেছে, খাস জমির প্রায় পঞ্চাশ শতাংশে একাধিক বসতি ও অন্যান্য জবর দখল হয়েছে ৷
যদিও, এ দিন জমি জরিপের সময় সেই সব বেআইনি দখলদারদের সরকারি তরফে কিছু বলা হয়নি ৷ সরকারি আধিকারিকরা জমি মাপজোক করে সেখানে বেশ কয়েকটি বোর্ড বসিয়ে দিয়ে যান ৷ যেখানে লেখা রয়েছে, এই জমি সরকারের ৷ তবে, জমি মাপজোক ও বোর্ড বসানোর সময় কোনও রকম বাধার মুখে পড়তে হয়নি আধিকারিকদের ৷
108 নম্বর ওয়ার্ডে খাস জমি পুনরুদ্ধারে নামল ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর ৷ (নিজস্ব চিত্র) উল্লেখ্য, কলকাতা পুরনিগমের 108 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হলেন সুশান্ত ঘোষ ৷ গত মাসেই তাঁর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল ৷ সুপারি কিলার ভাড়া করে তাঁকে খুনের চেষ্টা হয়েছিল ৷ এরপরেই ওই এলাকায় বেআইনিভাবে সরকারি জমি দখলের বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন কাউন্সিলর ৷ তবে, তার দায় তিনি নিতে চাননি ৷ জানিয়েছিলেন, তিনি আড়াই বছর হল ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়েছেন ৷ তার আগে যিনি কাউন্সিলর ছিলেন, সেই কাউন্সিলরের কাজের দায় সুশান্ত ঘোষ নেবেন না-বলে জানিয়েছিলেন ৷
সুশান্ত ঘোষের সেই অভিযোগের পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ৷ কলকাতা পুরনিগম ও পুলিশের সাহায্য নিয়ে সরকারি খাস জমি পুনরুদ্ধারে নেমেছে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর ৷ 108 নম্বর ওয়ার্ডের 12 নম্বর মৌজার 441 নম্বর দাগেই রয়েছে 74 একর সরকারি জমি ৷ দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় সেই জমির বেশ কিছুটা দখল হয়েছে ৷
কলকাতা পুরনিগমের ল্যান্ড অ্যান্ড সার্ভেয়ার বিভাগের মানচিত্র দখল হওয়া জমি গেরুয়া রঙে চিহ্নিত ৷ (ছবি- কেএমসি ল্যান্ড অ্যান্ড সার্ভেয়ার বিভাগ) কলকাতা পুরনিগমের ল্যান্ড অ্যান্ড সার্ভেয়ার ডিপার্টমেন্টের মৌজা মানচিত্র অনুযায়ী, 50 শতাংশের উপর জমি দখল হয়ে রয়েছে ৷ মানচিত্রে দখল হওয়া জমির অংশ গেরুয়া রঙ দিয়েছে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন ৷ আর খালি থাকা খাস জমির অংশ সবুজ রঙে চিহ্নিত করে রেখেছে পুরনিগম ৷ যদিও, এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনও মন্তব্য করেননি সরকারি আধিকারিকরা ৷
এ নিয়ে কলকাতা পুরনিগমের মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "সরকারি জমি দখল করে কেউ কিছু করলে, তা ভেঙে দেওয়া হবে ৷ জমি পুনরুদ্ধার অনেকদিন ধরেই চলছে ৷ আগামিদিনেও চলবে ৷"