কলকাতা, 5 মার্চ:1984 সালেমাটির নীচ দিয়ে ছুটল রেল ৷ গোটা দেশকে তাক লাগিয়ে দিয়ে পাতালঘরে বিকল্প পরিবহণের পথ দেখাল কলকাতা ৷ খুব অল্প দিনের মধ্যেই মেট্রো রেল হয়ে উঠল মহানগরীর লাইফলাইন ৷ ক্রমে ডালপালা মেলেছে কলকাতা মেট্রো ৷ তবে জন্মের 41 বছর পর সে নয়া ইতিহাসের দোরগোড়ায় ৷ এ বার আর শুধু মাটির নীচ দিয়ে নয়, নদীর বিপুল জলরাশির নীচ দিয়ে ছুটবে মেট্রো ৷ এটাও দেশে এই প্রথম ৷ বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে উদ্বোধন হতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত অংশের ৷
শহরে মেট্রোর গোড়াপত্তন: 1984 সালের 24 অক্টোবর ৷ দেশের মধ্যে প্রথমবার কলকাতায় চলেছিল মেট্রো রেল । তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় 1949 সালে মহানগরীর পরিবহণ ব্যবস্থার আরও একটি বিকল্প পথ হিসেবে মাটির নীচ দিয়ে রেল ব্যবস্থা বা মেট্রো রেলের পরিকল্পনা করেন । এর পর গড়িয়ে যায় বেশ কয়েক বছর । 1969 সালে মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট নামে একটি প্রজেক্ট তৈরি করা হয় । এরপর বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অবশেষে পাঁচটি রুটে মেট্রো চালানো যেতে পারে, এমন একটি প্রস্তাব দেওয়া হয় । 1984 সালের 24 অক্টোবর প্রথমবার মেট্রো চলে ।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর গোড়াপত্তন: জানা যায় যে, 1921 সালে কলকাতা ও হাওড়াকে নদীর নীচ দিয়ে টিউব রেলের মাধ্যমে যুক্ত করার কথা প্রথম ভেবেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার । কিন্তু সেই পরিকল্পনা সেখানেই থমকে যায় । এরপর 2008 সালে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেয় ইউপিএ সরকার । ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয় 2009 সালে । এরপর 2013 সালে প্রথম প্রস্তাবিত রুটের পরিবর্তন করা হয় ।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডোর: নয়া রুট হয় সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত (16.55 কিমি)৷ শহর কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী শহর হাওড়াকে মেট্রোপথে যুক্ত করবে এই করিডোর । মাটির উপর দিয়ে 5.74 কিমি এবং মাটির নীচ দিয়ে মেট্রো যাবে 10.81 কিমি । মোট থাকবে 12টি মেট্রো স্টেশন । মটির উপরে মোট ছয়টি স্টেশনের সবক'টি চালু হয়ে গিয়েছে । মাটির নীচের ছয়টি স্টেশনের দুটি চালু হয়েছে । অর্থাৎ মোট আটটি স্টেশনে বাণিজ্যিক পরিষেবা চালু হয়েছে । ডিপো সেন্ট্রাল পার্ক স্টেশনে রয়েছে ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম । তবে যদি এই ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ে তাহলে ব্যাক আপ ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম থাকবে হাওড়া মেট্রো স্টেশনে । যেহেতু এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মেট্রো স্টেশন, তাই এখানে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চায় না কর্তৃপক্ষ । কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল বা (সিবিটিসি) সিগন্যালিং ব্যবস্থা থাকছে । পুরো রুটে প্রতিদিনের আনুমানিক যাত্রী সাত লক্ষের কাছাকাছি হবে ।
প্রকল্পের খরচ ও জরুরি তথ্য: এই প্রকল্পের জন্য মোট খরচ হয়েছে 10,442 কোটি টাকা ৷ এ বার জেনে নেব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য,
* হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডের মধ্যে চারটি স্টেশন: এসপ্ল্যানেড, মহাকরণ, হাওড়া স্টেশন মেট্রো স্টেশন এবং হাওড়া ময়দান ।