কলকাতা, 16 ডিসেম্বর: শহর থেকে শহরতলি হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বুকে আগলে পাহারা দেন যাঁরা, সেই সমস্ত চুক্তিভিত্তিক রক্ষীদের পিএফ-এর টাকাই নিরাপদ নয় ! যে সংস্থার আওতাধীন তাঁরা কর্মরত, সেই সংস্থাই এই হকের টাকা দিনের পর দিন লুট করছে বলে অভিযোগ ।
সেই টাকা ফেরত পেতে এবার মেয়রের দারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন কলকাতা পুরনিগমের চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তারক্ষীদের সংগঠন । আগামী 20 ডিসেম্বর তাঁরা মেয়রের কাছে এই হকের টাকা ফেরত-সহ একাধিক দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিও দেবেন । এই কর্মসূচির আহ্বান জানিয়েছে সিটু অনুমোদিত সংগঠন কলকাতা জেলা সিকিউরিটি অ্যান্ড অ্যালায়েড ওয়ার্কস মেন্স ইউনিয়ন ।
কলকাতার মেয়রের কাছে ডেপুটেশন দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে (নিজস্ব ছবি) দিনরাত এক করে কাজ করেন । অক্লান্ত পরিশ্রম করলেও মাসে জোটে নামমাত্র টাকা মজুরি । শুধু তাই নয় বছরের পর বছর কাজ করে গেলেও বেতন বৃদ্ধি সেই অর্থে নেই । আবার ছুটির দিনে কাটা যায় মজুরির টাকা । অভিযোগ, এমনই চরম আর্থিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে কলকাতা পুরনিগমের চুক্তিভিত্তিক প্রায় হাজার তিনেক নিরাপত্তারক্ষীকে ।
কলকাতার মেয়রের কাছে ডেপুটেশন দেওয়ার পোস্টার (নিজস্ব ছবি) তাঁদের অবসর ভাতা থেকে অন্য আর্থিক সুবিধাও নেই । ফলে 60 বছর বয়সে অবসর নিতে হয় শূন্য হাতে । তখন পিএফ-এ জমা পড়া টাকাই তাঁদের ভরসা ৷ অভিযোগ, দাঁতে দাঁত চেপে রুটি রুজির লড়াই করে যাওয়া এই কর্মীদের দিনের পর দিন পিএফ-এর টাকা লুঠ হচ্ছে ৷ জমা পড়ছে না অ্যাকাউন্টে । তাই লুঠ হওয়া পিএফ-এর টাকা ফেরত-সহ আরও একাধিক দাবি নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দ্বারস্থ হতে চলেছেন এই সমস্ত চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তা কর্মীরা । তাঁরা স্মারকলিপিও দেবেন ।
কলকাতা পুরনিগমে কর্মরত চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তারক্ষী (নিজস্ব ছবি) এই প্রসঙ্গে কলকাতা জেলা সিকিউরিটি অ্য়ান্ড অ্যালায়েড ওয়ার্কস মেন্স ইউনিয়নের নেতা মানস সিনহা জানান, এই নিরাপত্তারক্ষীরা যে সমস্ত ঠিকা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, সেই সমস্ত সংস্থা এদের পিএফ অ্যাকাউন্টে মাসের পর মাস টাকা জমা দেয় না । যা এদের হকের টাকা। সারা মাসে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দশ হাজার টাকা মজুরি পান৷ সব কেটেকুটে তাতে এখন সংসার চালানো দুষ্কর ।
তিনি বলেন, ‘‘তাই মজুরি ন্যূনতম 26 হাজার টাকার দাবি পিএফ-এর লুট হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত গ্র্যাচুয়িটি দেওয়ার দাবি-সহ নানা দাবি নিয়েই আমরা মেয়রের দ্বারস্থ হব । তাঁকে স্মারকলিপি দিয়ে এই কয়েক হাজার নিরাপত্তারক্ষী, যাঁরা জনগণের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বুকে আগলে রাখছেন, তাঁদের আর্থিক দুরবস্থা মেটানোর দাবি জানানো হবে ।’’