কলকাতা, 8 জুন:প্রধানমন্ত্রী পদে রবিবার তৃতীয়বারের জন্য শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর মন্ত্রিসভা ৷ শপথের আগেই এই সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে বড়সড় ভবিষ্যদ্বাণী করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তাঁর কথায়, "আজ করেনি মানে ইন্ডিয়া জোট কাল সরকার গঠনের দাবি জানাবে না তা নয় ৷" সব পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মমতা ৷
এনডিএ এবং লোকসভার নেতা হিসাবে নরেন্দ্র মোদিকে বেছে নেওয়ার পরই বড় দাবি শোনা গিয়েছিল মোদির গলায় ৷ বর্তমান জোট সরকার পূর্ণ সময়ের জন্য স্থায়ী থাকবে বলেও জোর গলায় দাবি করেছেন মোদি ৷ শনিবার তা কার্যত নস্য়াৎ করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তিনি পালটা চ্য়ালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, "আমরা লক্ষ্য রাখছি সব পরিস্থিতির উপর ৷ দেশ পরিবর্তন চায় ৷ এত বড় হারের পর মোদিবাবুর উচিৎ ছিল কাউকে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়া ৷ নতুন সরকার শেষ পর্যন্ত ইন্ডিয়ার হবে ৷ তবে যে কদিন এরা থাকবে বলব, এনআরসি বাতিল করতে হবে, সিএএ বাতিল করতে হবে ৷"
এখানেই থেমে থাকেননি মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ স্পষ্টভাবে তিনি এও জানিয়ে দিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত দিল্লিতে সরকার গড়বে ইন্ডিয়া জোটই ৷ তিনি বলেন, "এনডিএ তে যে দলগুলি আছে তাদের চাহিদা অনেক বেশি ৷ ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে তা নয় ৷ আমরা সকলেই দেশের প্রতি ডেডিকেটেড ৷ তাই সব পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলছি আমরা ৷ কারা কী পোর্টফলিও পাচ্ছেন সবই দেখব ৷ ওদের সামলাতে দিন, কাকে কাকে সন্তুষ্ট করতে হবে দেখুন !"
অন্যদিকে, তিনি এও বলেন, "না আমন্ত্রণ এসেছে না কেউ যাবে ৷ অগণতান্ত্রিক ও বেআইনিভাবে সরকার গঠন করছে বিজেপি ৷ 15 দিনও এই সরকার থাকতে নাও পারে ৷ আমি জ্যোতিষ নই, তবে আমার আন্দাজ এটা ৷ ইন্ডিয়া সরকার গঠনের জন্য নিশ্চয়ই দাবি জানাতে পারত ৷ হয়তো কোনও সিদ্ধান্ত আছে ৷ ইন্ডিয়া জোট সরকার গড়তে চায় না বলে এটা নয় তারা চাইবে না বা ভবিষ্যতে করবে না ৷ অন্যদিকে, সংসদে দলের নেতৃত্ব নিয়েও জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ তিনি এদিন জানান, লোকসভায় দলনেতা তাকছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ই ৷ মুখ্যসচেতক কল্য়াণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় এবং তৃণমূলের উপনেতা কাকলি ঘোষ দস্তিদার ৷ অন্যদিকে, আবারও রাজ্যসভায় দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। মুখ্যসচেতক হচ্ছেন সাগরিকা ঘোষ ৷ রাজ্যসভায় তৃণমূলের উপনেতা হচ্ছেন নাদিমুল হক ৷
শুধু তাই নয়, এদিন শেয়ার বাজার নিয়ে রাহুলের সুরেই সুর মেলাতে দেখা গেল মমতাকেও ৷ তিনি বলেন, "মোদিবাবুর হার শেয়ার বাজারে বড় স্ক্যাম হয়ে হয়ে গিয়েছে ৷ এটা নিয়ে আমরাও ভাবছি আইনের পথে যেতে পারি কি না ৷ একদিনের এক্সিট পোলের নামে শেয়ার বাজারে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হয়ে গেল ৷ ডাল মে কুচ কালা হ্যায় ৷ টোটাল স্ক্যাম হয়েছে ৷ এর তদন্ত হওয়া উচিৎ ৷" এরই পাশাপাশি সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করে মমতা আরও বলেন, "বিজেপির আসন পাওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের হাত আছে ৷ এই সরকার যে শপথ নিতে যাচ্ছে, তাতে দেশের গণতন্ত্র আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৷ আর বিজেপির একক গড়িষ্ঠতা নেই সুতরাং কী করে বিল পাশ করবে, সংবিধান পরিবর্তন করবে কী করে ?"