গুসকরা, 18 জুন: সাহায্যের আশ্বাস থাকলেও নিরাশ হলেন স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা ৷ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত বিউটি বেগমের দেহ আনতে মিলল না রেল কিংবা প্রশাসনের সাহায্য ৷ অগত্যা কোনওরকমে নিজেদের খরচে গাড়ি জোগাড় করে শিলিগুড়ি হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের গুসকরাতে স্ত্রী-র দেহ নিয়ে এলেন স্বামী শেখ হাসমত ৷ তবে এই ঘটনার পর স্বভাবতই রেল ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন ৷
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মিলছে না প্রশাসনের সাহায্য (ইটিভি ভারত) এই বিষয়ে মৃতের স্বামী হাসমত বলেন, "সোমবার সকালে আমি কোম্পানির কাজে চলে যাই। আমার স্ত্রী বিউটি বাড়ি ফেরার জন্য কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ধরে। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ট্রেন দুর্ঘটনার কথা জানতে পারি ৷ খবর পেয়ে শিলিগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চলে যাই। সেখানে তন্নতন্ন করে স্ত্রী-কে খুঁজতে থাকি। পরে মর্গে গিয়ে বিউটির দেহ শনাক্ত করি। রেল কিংবা রাজ্য সরকারের তরফে কেউ কোনও সাহায্য করেনি। রেলের তো কোনও ভূমিকা ছিলই না ৷ এমনকী, শিলিগুড়ি থেকে নিজের খরচে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে স্ত্রী-র দেহ গুসকরাতে আনতে হয়েছে ৷"
শেখ হাসমতের সহকর্মী শেখ তারিক আনোয়ার বলেন, "আমরা প্রথমে জানতাম উনি হলদিবাড়ি ট্রেনে উঠেছেন। কিন্তু হলদিবাড়ি ট্রেন না থাকায় তিনি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে চাপেন। ট্রেনটা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছাড়ে। খবরে জানতে পারি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে ৷ আমরা তড়িঘড়ি সেখানে যাই ৷ রেলপুলিশের সঙ্গে কথা বলে আমরা হাসপাতালে যাই। খুঁজে না পেয়ে মর্গে যাই ৷ সেখানেই দেহ শনাক্ত করা হয়। কিন্তু দেহ আনার বিষয়ে প্রশাসনের কোনও রকম সাহায্য পাইনি ৷ হাসপাতালে রেলের কোনও আধিকারিকও ছিলেন না। শুধু আমাদের নয়, যাঁদের আত্মীয় পরিজন মারা গিয়েছেন তাঁরাও সবাই নিজেদের মতো করে গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে দেহ ফেরত এনেছেন ৷"
সোমবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে বাড়ি ফেরার সময় ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বিউটি বেগমের। বিউটি বেগমের (43) বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরের 5 নং ওয়ার্ডের ইটাচাঁদা এলাকায়। তাঁর স্বামী শেখ হাসমত শিলিগুড়িতে একটা কারখানায় গাড়ি চালাতেন। মাস চারেক আগে হাসমত সেই কাজ পান। বিউটি দিন পনেরো অন্তর একবার করে শিলিগুড়ি যেতেন। বিউটির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে ৷ পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া ৷