কলকাতা, 9 জুলাই: ধর্ম মানা, না-মানা নিয়ে সিপিএমের মধ্যে নানান মতভেদ রয়েছে। সোমবার রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর 111তম জন্মদিনে তাঁরই উদাহরণ টেনে অবস্থান স্পষ্ট করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । একই সঙ্গে 'ওল্ড ইজ গোল্ড' এর তথ্যকে নস্যাৎ করে নতুন প্রজন্মকে পছন্দের তালিকায় রাখেন বলে স্পষ্ট জানালেন তিনি ।
নিউটাউনে জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ প্রাঙ্গণে 'প্রসঙ্গ জ্যোতি বসু' শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় সোমবার ৷ সেখানে সেলিম বলেন, "আমাদের অনেকে উন্নাসিকতা দেখায় । কেউ কেউ আছে যারা মোদির মতো সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে । আবার কেউ ওসবের মধ্যেই থাকে না । জ্যোতি বসুর জীবন থেকে এই শিক্ষাই নিতে হবে । নির্লিপ্ততা থাকবে, সম্পৃক্ততাও থাকবে । জ্যোতিবাবুর বাবা-মা ছিলেন ধার্মিক । তাঁর বাবা লোকনাথের ভক্ত ছিলেন । জ্যোতিবাবু বহু বার গল্প করে বলেছেন, তিনি নিজে ধর্ম না-মানলেও প্রসাদ খেতেন ।"
দলের তরুণ প্রজন্মের পাশে দাঁড়িয়ে সেলিমের আরও মন্তব্য, "অনেকে বলেন, ওল্ড ইজ গোল্ড । আমি তা মনে করি না। প্রতিটি প্রজন্মের সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসে। সেই প্রজন্মকেই তার মুখোমুখি হতে হয় । জ্যোতিবাবুর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েই নিজেদের অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে হবে। বাধা কাটিয়ে উত্তরণ ঘটাতে নিজেদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে ।"
জ্যোতি বসুর জন্মবার্ষিকীতে আলোচনা সভা (নিজস্ব ছবি) এ দিনের অনুষ্ঠানে চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ বলেন,"বারবার দেখেছিলাম জ্যোতিবাবুর কথায়-ব্যাখ্যায় দ্বান্দ্বিকতা রয়েছে। একজন মার্কসবাদীর থেকে আমরা সেই প্রত্যাশাই করি। পরাধীন ভারতে জন্মেছিলেন জ্যোতি বসু । ইংরেজ শাসনে দুর্ভিক্ষ দেখেছিলেন। কিন্তু সব শক্তি নিয়ে আর্ত, দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল পার্টি। কঠিন সময়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল । সেই চ্যালেঞ্জ জ্যোতিবাবুরা গ্রহণ করেছিলেন । অবস্থার পরিবর্তন করেছিলেন । জ্যোতি বসুর জীবন থেকে এই শিক্ষা নিতে হবে।"
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জন্মদিনে রক্তদান শিবিরের আয়োজন (নিজস্ব ছবি) উল্লেখ্য, জ্যোতি বসুর 111তম জন্মদিবসে 'প্রসঙ্গ জ্যোতি বসু' শীর্ষক সভায় বক্তব্য রাখেন চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক তথা জেবিসিএসএসআর-এর ট্রাস্ট সদস্য মহম্মদ সেলিম । সভায় সভাপতিত্ব করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তথা জেবিসিএসএসআর-এর চেয়ারম্যান বিমান বসু । উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোম-সহ পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি, রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলী ও রাজ্য কমিটির সদস্যরা ।