কলকাতা, 3 ডিসেম্বর:সনাতনী নেতা প্রভু চিন্ময়কৃষ্ণ গ্রেফতারের প্রতিবাদে উত্তপ্ত প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ ৷ সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর একের পর এক হামলার অভিযোগ উঠছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৷ এই আবহে সেই দেশের সন্ন্যাসীদের আড়ালে ধর্মপালনের অনুরোধ জানালেন ইসকন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমণ দাস ৷ সনাতনী নেতাদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই অনুরোধ বলে জানান তিনি ৷
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর ৷ সেই দেশ থেকে সন্ন্যাসীদের ও ইসকনের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে ৷ তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সময় আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, মন্দিরের ভিতরে কিংবা বাড়ির ভিতরে ধর্মপালন করুন ৷ প্রাণে বাঁচার জন্য মাথায় তিলক ও গেরুয়া কাপড় ত্যাগ করুন ৷ সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করুন ৷" কলকাতা ইসকনের সহ-সভাপতির কথায়, সুরক্ষার স্বার্থে কয়েকদিন সতর্কতা অবলম্বন করে চলাই ভালো ৷ এই মুহূর্তে তাঁদের সুরক্ষিতভাবে বেঁচে থাকা বেশি জরুরি ৷
গত 5 অগস্ট গণঅভ্যুথানের মাধ্যমে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে ৷ ক্ষমতায় এসেছে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার ৷ তারপর থেকেই সেই দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ৷ সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মহলও ৷ এই আবহে গত 25 নভেম্বর দেশদ্রোহিতার অভিযোগে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ ৷ সনাতনী নেতার গ্রেফতারির পর পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ ৷
সম্প্রতি চট্টগ্রামের 3টি হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর করা হয় ৷ এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলে রাধারমণ দাস বলেন, "রীতিমতো ভয়ের আবহে সেখানে বসবাস করছে ভক্তদের পরিবার ৷" সুতরাং, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হওয়া পর্যন্ত নিজেদের সুরক্ষায় জনসমক্ষে ধর্মপালন না-করাই শ্রেয় বলে মনে করেন কলকাতা ইসকনের মুখপাত্র ৷
উল্লেখ্য, 1971 সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় সেই দেশে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল 22 শতাংশ ৷ বিগত কয়েক দশকে সেই সংখ্য়া কমে 8 শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ এর কারণ হিসেবে মূলত, বছরের পর বছর ধরে চলে আসা সেই দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন, দেশত্যাগ এবং বিক্ষিপ্ত কয়েকটি হিংসার ঘটনাকে দায়ী করা হয় ৷