বহরমপুর, 12 সেপ্টেম্বর: ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হামায়ুন কবীরের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে ডেপুটেশন দিল আইএমএ'র মুর্শিদাবাদ শাখা। একই সঙ্গে বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করেছেন চিকিৎসকরা ৷ একদিন আগে হুমায়ন দাবি করেন, চিকিৎসকদের যেমন আন্দোলনের অধিকার আছে তেমনি অন্যদের তাঁদের ঘেরাও করার সাংবিধানিক অধিকারও আছে। এরপরই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কাজে না ফিরলে চিকিৎসকদের হামলার মুখে পড়তে হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন শাসক শিবিরের এই বিধায়ক । ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্যের সহ-সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "বিধায়কের প্ররোচনামূলক মন্তব্যের পর কোনও চিকিৎসক আক্রান্ত হলে তার দায় নিতে হবে হুমায়ুন কবীরকে।"
এফআইআর চিকিৎসক সংগঠনের (ইটিভি ভারত) পশাপাশি তিনি কার্যত হুঁশিয়ারির সুরেই বলেন, "আমাদের মেরুদণ্ড সোজা রয়েছে। বিধায়ককে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে।" বৃহস্পতিবার বহরমপুর আইএমএ-র সদস্যরা মিছিল করে জেলাশাসকের দফতরে যান। কিন্তু জেলাশাসক নিজে স্মারকলিপি না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ চিকিৎসক মহল। জেলাশাসকের দফতর ঘেরাওয়ের প্রচ্ছন্ন হুমকিও দেওয়া হয় আইএমএ-র তরফে। প্রথমে চিকিৎসক মহলের দাবি ছিল, তাঁদের এই ডেপুটেশন এফআইআর হিসেবে গণ্য করা হোক। পরে এফআইআর দায়ের হয়।
বুধবার এক বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমে হুমায়ুন কবীরের মন্তব্যে চিকিৎসক মহলে ঝড় উঠেছে। হুমায়ুন কবীর চিকিৎসকদের কাজে না ফেরার সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে বলেন, "চিকিৎসকরা যদি রোগীদের স্বার্থের কথা না ভাবেন তাহলে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের আম জনতার কথা ভেবে পথে নামতে হবে। তাতে চিকিৎসকদের সুরক্ষা বিঘ্নিত হতে পারে। কারণ চিকিৎসকরা পথে বসে আন্দোলন করলে আমাদেরও চিকিৎসকদের ঘেরাও করার সাংবিধাবিক অধিকার আছে।" তৃণমূল বিধায়ক কার্যত চিকিৎসকদের হুমকি দিয়েই কাজে ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন। এমনকী তিনি পথে নামলে চিকিৎসকদের উপর হামলা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
এরপরই বহরমপুরে চিকিৎসক মহল নড়েচড়ে বসেছে। বৃহস্পতিবার আইএমএ-র সদস্যরা জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে তাঁদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে স্মারকলিপি জমা দেন। সাংবাদিকদের সামনে আইএমএ-র জেলা সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্য্য বলেন, "ভারতপুরের তৃণমূল বিধায়ক চিকিৎসকদের হুমকি দিয়েছেন ৷ তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা জেলাশাসক থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার ও সিএমওএইচ-কে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে ডেপুটেশন জমা দিয়েছি। চিকিৎসকরা যদি কোনওভাবে আক্রান্ত হন তার দায় হুমায়ুন কবীরকে নিতে হবে।" বিধায়ককে পালটা হুমকি দিয়েছেন চিকিৎসকরা ৷