বারুইপুর, 5 সেপ্টেম্বর: আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে রাত দখল চলছে কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় ৷ সেই সময় আরেক নির্যাতিতা বিচারের দাবিতে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরে হয়রান হলেন ৷ তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ ৷ এদিকে থানা প্রথমে সেই অভিযোগ নিতেই চায়নি ৷
কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ মোমবাতি হাতে, 'বিচার চাই' বা 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' স্লোগান দিয়ে বিচার চাইছে ৷ তখন দক্ষিণ 24 পরগনার বারুইপুরে এক প্রৌঢ় নির্যাতিতাকে নিয়ে হাসপাতালে ঘুরছেন তাঁর পরিবার ৷ পাশে দাঁড়ায়নি থানা, অভিযোগ পরিবারের ৷
নির্যাতিতার আত্মীয়রা বলেন, "আমার জেঠিমা কিয়স্ক ব্যাঙ্ক থেকে টাকা নিয়ে ফিরছিলেন ৷ ওই ব্যাঙ্কটি রাত 8 টা পর্যন্ত খোলা ছিল ৷ রাস্তায় কিছুটা জায়গা অন্ধকার ছিল ৷ সেখানে কয়েকজন দুষ্কৃতী বসে আড্ডা মারছিল ৷ তারা জেঠিমার পিছনে পিছনে আসতে থাকে ৷ তখন জেঠিমা বলেন, তোরা আসছিস কেন ? এরপরই ওই দুষ্কৃতীরা পিছন দিক থেকে জেঠিমার উপর চড়াও হয় ৷ তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ৷"
অভিযোগ, বছর পঞ্চাশের ওই মহিলাকে মঙ্গলবার রাতে এলাকারই এক বছর ত্রিশের যুবক শারীরিক নিগ্রহ করে ৷ বুধবার সন্ধ্যায় অসুস্থ বোধ করায় স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে শারীরিক পরীক্ষার নামে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় রাখা হয় নির্যাতিতা প্রৌঢ়কে ৷ পরে তাঁকে মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় ৷ রাত বারোটার পর সেখানে পৌঁছন মহিলা ৷
এদিকে খবর পেয়ে এলাকার লোকজন থানায় জড়ো হন ৷ অভিযোগ, এফআইআর করতে গড়িমসি করে পুলিশ ৷ উলটে বকুলতলা থানার ওসির সঙ্গে বসে আলোচনা করছিলেন অভিযুক্ত, অভিযুক্তের বাবা এবং এক পঞ্চায়েত প্রধান ৷ এই প্রসঙ্গে নির্যাতিতার ছেলে বলেন, "থানা প্রথমে কোনও অভিযোগ নিতে চাইছিল না ৷ অভিযুক্ত, অভিযুক্তের বাবা, গড়দোয়ানির পঞ্চায়েত প্রধান এবং স্থানীয় কয়েকজন থানার ভিতরে বসে ওসির সঙ্গে কথা বলছিল ৷ আমাদের কোনও কথাই শুনছিল না ৷"
নির্যাতিতার দুই আত্মীয় বলেন, "থানা প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে ৷ শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দায়িত্ব থানার ৷ এ ব্যাপারে থানা কোনও সহযোগিতা করেনি ৷ আমরা পাড়া থেকে সবাই দলবদ্ধ ভাবে থানায় গেলাম, তখন শারীরিক পরীক্ষার জন্য পাঠাল ৷ এদিকে পরীক্ষার জন্য পাঠালেও সঙ্গে কোনও পুলিশ দেয়নি ৷ এদিকে ডাক্তার হাসপাতাল থেকে ফোন করছেন ৷ তিন-চার বার ফোন করার পর এবং ছেলেরা জড়ো হওয়ার পর তখন বাধ্য হয়ে পুলিশ হাসপাতালে এসেছে ৷"