পাত্রসায়ের, 30 নভেম্বর: একভাই তৃণমূলের অঞ্চল সহসভাপতি, অন্যজন দলেরই অঞ্চলের কোর কমিটির সদস্য। দুই ভাইয়ের একত্রে বসবাসের জন্য রয়েছে প্রাসাদোপম দোতলা বাড়ি। কিন্তু তারপরেও আবাস তালিকায় নাম ছিল পরিবারের। সমীক্ষা শুরু হতেই অবশ্য নিজে থেকেই আবাসের বাড়ি না-নেওয়ার জন্য স্থানীয় বিডিও অফিসে আবেদন জানিয়েছে ওই পরিবার।
বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের বালসি 2 গ্রাম পঞ্চায়েতের পানপুকুর মাঝি পাড়ার এমন ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। তৃণমূল এই ঘটনাকে সততা বলে প্রশংসা করলেও, কটাক্ষ বিজেপির ৷
আবাস তালিকা থেকে নাম ফেরানোর আর্জি তৃণমূল নেতার (ইটিভি ভারত) আবাস প্রকল্পের তালিকা নিয়ে এই প্রথম নয়, বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে পাকা বাড়ি থাকা সত্বেও শুধুমাত্র শাসকদলের নেতা বা ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে নাম উঠেছে আবাস তালিকায়। বহু ক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো ঘটনাও। শুধুমাত্র শাসক দলের ঘনিষ্ঠ না-হওয়ায় বসবাসযোগ্য বাড়ি না থাকা সত্ত্বেও তালিকায় ঠাঁই হয়নি হতদরিদ্র পরিবারের। এবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের বালসি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও দেখা গেল সেই একই ছবি। জানা গিয়েছে, বালসি গ্রাম পঞ্চায়েতে নিজেদের পাকা দোতলা বাড়ি রয়েছে সম্পর্কে দুই ভাই তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সহসভাপতি নিমাই মাঝি ও তৃণমূলের অঞ্চল কোর কমিটির সদস্য আনন্দ মাঝির। সম্প্রতি জেলাজুড়ে আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজ শুরু হলে দেখা যায় নিজেদের পাকা দোতলা বাড়ি থাকা সত্বেও আবাসের উপভোক্তা তালিকায় ওই পরিবারের নাম রয়েছে।
বিষয়টি জানার পরেই দলকে ওই প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলেন ওই দুই ভাই। ওই প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য পাত্রসায়ের বিডিও অফিসে লিখিতভাবে আবেদনও জানান আনন্দ মাঝি। তাঁদের দাবি, বছর পাঁচেক আগে যখন আবাসের সমীক্ষা হয়েছিল, তখন তাঁদের পাকা বাড়ি ছিল না। পরবর্তীতে তাঁরা পাকা বাড়িটি তৈরি করেছেন। এখন নিজেদের পাকা বাড়ি থাকায় আবাস প্রকল্পের বাড়ি তাঁরা ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অপর একটি দরিদ্র পরিবার যাতে ওই বাড়ি পেতে পারে, সেই উদ্দেশেই তাঁরা বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছেন।
এই ঘটনা সততার নজির হয়ে থাকবে বলেও দাবি জেলা তৃণমূলের। বিজেপি অবশ্য এই ঘটনাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পাঁচ বছর আগে যে পরিবার কাঁচা বাড়িতে বসবাস করত পাঁচ বছরের মাথায় তিনি কোন জাদুবলে এই প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরি করতে পারেন ? এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে বিজেপির কটাক্ষ, জনরোষের ভয়েই আবাস বাড়ি ফেরানোর আবেদন জানাতে বাধ্য হচ্ছেন ওই তৃণমূল নেতার পরিবার।