গঙ্গারামপুর, 1 জুলাই: বাবার যৌন লালসার 'শিকার' কিশোরী ৷ অভিযোগ, মায়ের কাছে সাহায্য চেয়েও কাজের কাজ হয়নি ৷ ফলে উপায় না পেয়ে বাড়ি থেকে পালাতে হয় বছর ষোলের ওই কিশোরীকে ৷ বাঁচার জন্য আশ্রয় নেয় পরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে ৷ এদিকে মেয়েকে না পেয়ে স্থানীয় থানায় অপরহরণের অভিযোগ দায়ের করেন বাবা ৷ পুলিশ ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার পর প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ৷ ঘটনায় কিশোরীর মা-কে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ তবে মূল অভিযুক্ত বাবার এখনও কোনও খোঁজ নেই ৷ এমন নিন্দনীয় ঘটনার সাক্ষী দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার কয়েকদিন পরে পুলিশের দ্বারস্থ হয় ওই নাবালিকা ৷ তার থেকে পুলিশ জানতে পারে দীর্ঘদিন ধরেই বাবার যৌন লালসার শিকার সে ৷ এমনকী মা বিষয়টি জানলেও ব্যবস্থা নেননি ৷ মেয়ের পাশে দাঁড়ানি বলেও অভিযোগ নির্যাতিতার ৷ ওই কিশোরীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ নির্যাতিতার মা-বাবার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে ৷
নির্যাতিতাকে জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্যদের হতে তুলে দেওয়া হয় ৷ বিষয়টি জানতে পেরে গা ঢাকা দেন 'কীর্তিমান' বাবা ৷ এরপরেই ওই নির্যাতিতার বাড়িতে হানা দিয়ে তার মা-কে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ এখনও ফেরার অভিযুক্ত বাবা ৷ গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতের বিচারক ওই মহিলাকে 14 দিনের জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ৷
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন মন্দিরা রায় বলেন, "এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে ৷ গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ মেয়েটিকে আমাদের কাছে পাঠিয়েছে ৷ শুনেছি মেয়েটি সব ঘটনা তার মা-কে জানালেও তিনি কোনও সাহায্য করেননি ৷ মেয়েটি আমাদের কাছেই রয়েছে ৷ সরকারও মেয়েটির পাশে রয়েছে ৷ এখন সে অনেকটাই ভালো রয়েছে ৷ নিজের বাড়িতে ফিরতে চাইছে না ৷ আমরা ওকে হোমে রেখেছি ৷ হোমে সে 21 বছর বয়স পর্যন্ত থাকতে পারবে ৷ মেয়েটি এখন দশম শ্রেণিতে পড়ে ৷ যদি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, তবে ওর পক্ষেই ভালো হবে ৷ দেখা যাক, কী হয় ৷"
দক্ষিণ দিনাজপুরের বঙ্গরত্ন সম্মাননাপ্রাপ্ত সাহিত্যিক সুকুমার রায় আক্ষেপের সুরেই বলেন, "আজকাল অভিভাবকরাই তাঁদের মেয়ের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িয়ে যাচ্ছেন ৷ এটা সামাজিক অবক্ষয় ৷" গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য অবশ্য জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে ৷ মূল অভিযুক্ত পলাতক ৷ তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে ৷