দার্জিলিং, 10 অক্টোবর: পাহাড় থেকে সমতল। মহাসপ্তমীতে গোর্খাদের ফুলপাতি উৎসবে মাতল পাহাড়ের সব সম্প্রদায়ের মানুষ। সপ্তমীর দিন ফুলপাতি উৎসব পালিত হল দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক, কার্শিয়াংয়ের পাশাপাশি শিলিগুড়িতেও।
প্রতিবছর দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ গোটা পাহাড়ে ফুলপাতি উৎসব ব্যাপক উচ্ছ্বাসের সঙ্গে পালিত হয়। বলতে গেলে কার্নিভালের রূপ নেয় ওই উৎসব। গোর্খা বা নেপালি সম্প্রদায় দুর্গা পুজোর সপ্তমীতে এই উৎসব পালন করে। প্রতিবারের মতো এবারও দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার প্রত্যেকটি মহকুমা প্রত্যেকটি গ্রামে ফুলপাতি উৎসবকে কেন্দ্র করে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। কালিঝোরা থেকে শুরু করে কালিম্পং শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলপাতি উৎসবকে কেন্দ্র করে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন হয়েছিল। শোভাযাত্রায় অংশ নেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা।
একইভাবে শিলিগুড়িতে ফুলপাতি উৎসবে মাতল শহরবাসী। দুর্গাপূজো উপলক্ষে সপ্তমীর দিন প্রতি বছর ঐতিহ্য মেনে গোর্খা সম্প্রদায়ের তরফে ফুলপাতি শোভাযাত্রা করা হয়। এবছরও শিলিগুড়িতে ফুলপাতি শোভাযাত্রা করা হল শিলিগুড়ির ভানুভক্ত সমিতির পক্ষ থেকে। ভানুভক্ত সমিতির ফুলপাতি শোভাযাত্রা 33 তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। এদিন শিলিগুড়ির প্রধাননগর থেকে ওই শোভাযাত্রা শুরু করে সমগ্র হিলকার্ট রোড পরিক্রমা করে আবার প্রধাননগরে শেষ হয়। মূলত গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষেরা সপ্তমীর দিন এই শোভাযাত্রা করে। এদিনের শোভাযাত্রায় অংশ নেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব।
গোর্খা জনজাতিদের মতে যাঁরা দুর্গাপুজো করতে পারেন না তাঁরা ওই শোভাযাত্রার মাধ্যমে মা দুর্গাকে ফুল ও বেলপাতা চাল এবং টাকা উৎসর্গ করে। সেই ফুল ও বেলপাতা শহরজুড়ে ঘুরে সংগ্রহ করে দেবীর চরণে দেওয়া হয়। এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী গোর্খা জনজাতির মানুষ নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক পরে, নাচগানের মধ্যে দিয়ে নিজেদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে।
আয়োজক কমিটির সদস্য প্রবীণ কুমার রাই, "প্রতিবার ফুলপাতি উৎসব পাহাড়ে কার্নিভালের রূপ নেয়। কিন্তু হড়পা বানের জেরে পাহাড়ে যে ক্ষতি হয়েছে সেই কথা মাথায় রেখে এবার আমরা খুব সাধারণভাবে ফুলপাতি উৎসব পালন করলাম।" শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, "প্রতিবারের মতো এবারও ফুলপাতি উৎসবে আমরা সামিল হলাম। খুব ভালো লাগছে।"