কলকাতা, 27 জুলাই: মহিলাদের সঙ্গে সাপের তুলনা ! এমনই ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য গাড়ির পিছনে লিখে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন বিলাসবহুল এক গাড়ির মালিক ৷ কলকাতা পুলিশের এক সহ-কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকের নজরে আসে এই বিষয়টি ৷ তিনি দেখতে পান, গাড়ির পিছনে মহিলাদের নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য লেখা রয়েছে ৷ এরপর গাড়ির মালিককে শনাক্ত করে তাঁর ঠিকানায় গেল কলকাতা পুলিশের চিঠি ৷
কী লেখা ছিল ওই গাড়ির ব্যাক উইন্ডোতে ?
জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট গাড়ির মালিক এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন ৷ এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিক শ্রীকান্ত জগন্নাথরাও ইটিভি ভারতকে বলেন, "চলতি সপ্তাহে ইএম বাইপাসের উপর আমাদের একজন পুলিশ আধিকারিক প্রথম দেখতে পান, এই গাড়িটি ও গাড়ির পিছনে লেখাটি ৷ বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে ৷ সংশ্লিষ্ট সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে গাড়ির নম্বর বের করে আমরা গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করি ৷ গাড়ির ব্যাক উইন্ডোতে মহিলাদের নিয়ে বড় বড় করে লেখা ছিল, 'Believe Snake not a girl'৷" বাংলায় এই লেখার তরজমা করলে দাঁড়ায়, একটা সাপের উপর ভরসা করা যায়, কিন্তু একজন মহিলার উপর ভরসা করা যায় না ৷
এরপরেই ন্যায় সংহিতা এবং আইপিসি-র বেশ কয়েকটি ধারা উল্লেখ করে গাড়ির মালিকের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়। ডিসি ট্রাফিক শ্রীকান্ত জগন্নাথরাও ইটিভিকে বলেন, "গাড়ির মালিক পুলিশের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করেছেন ৷ তার যে ধ্যান ধারণা সেটা আমরা বদলাতে পেরে নিজেরাও আনন্দিত। ফলে ওই গাড়ি মালিকের নাম পরিচয় প্রকাশ্যে আনছি না ৷"
কলকাতা পুলিশের তরফে স্পষ্ট বলা হয়, সাপের সঙ্গে তুলনা করে গাড়ির পিছনে লিখে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে ৷ অন্যথায় আইনের পথে হাঁটবে কলকাতা পুলিশ ৷ লালবাজারের তরফে এই চিঠি পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেন ওই গাড়ির মালিক ৷ মহিলাদের সঙ্গে সাপের তুলনা করা সেই বিস্ফোরক মন্তব্যটি গাড়ির ব্যাক উইন্ডো থেকে মুছে ফেলেন গাড়ির মালিক ৷
শহর জুড়েই চলছে উইমেন সেফটির বিশেষ একটি অভিযান ৷ কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন মহিলা থানার অফিসার ইনচার্জ এবং অতিরিক্ত অফিসার ইনচার্জদের নেতৃত্বে শহরের উঁচুতলা থেকে নিচুতলার মহিলা কর্মীদের এবং গৃহবধূদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলছে পুলিশ ৷ এলাকায় তাঁদের কোনও সমস্যা হলে, তাঁরা যেন পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সেই বার্তাও দেওয়া হচ্ছে লালবাজারের তরফে। আর একজন মহিলাদের প্রতি এই ধ্যান ধারণা বদলে দিতে পেরে খুশি কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ৷