চন্দননগর, 9 নভেম্বর:লেজার শো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ ৷ যার জেরে সমস্ত আলোর বন্ধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছিল চন্দননগর মধ্যাঞ্চল জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি। মণ্ডপ, ঠাকুর ও স্ট্রিট লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয় সপ্তমীর সন্ধ্যায়। শুক্রবার রাত পর্যন্ত চন্দননগর কেন্দ্রীয় কমিটি ও চন্দননগর পুলিশ কমিশনার বৈঠক করেন। তাতে সিদ্ধান্ত হয় সমস্ত সাবধানতা অবলম্বন করে লেজার শো চালানোর অনুমতি দিয়েছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনার। অষ্টমীর সন্ধ্যা থেকে ফের চালু হয়েছে লেজার শো।
চন্দননগরে মধ্যাঞ্চলের প্রতিমা দর্শনে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমান ৷ গতকাল মধ্যাঞ্চলের আলো থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। ষষ্ঠীর দিন লেজার শো দেখানো হয়েছিল। কিন্ত চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে পদপিষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় এই শো বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। তাতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন পুজো উদ্যোক্তারা। গতকাল সমস্ত লাইট বন্ধ করে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। সপ্তমীর সন্ধ্যায় যখন রাস্তায় দর্শনার্থীদের ঢল, তখন লাইট বন্ধ থাকায় অনেকেই প্রশ্ন করেন হঠাৎ কেন লাইট বন্ধ হল ?
মধ্যাঞ্চলে অষ্টমীতে শুরু লেজার শো (ইটিভি ভারত) দর্শনার্থী থেকে পুজো কমিটি কী বলছেন?
- যদিও পুজো কমিটির পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের উদ্দেশে মাইকিং প্রচার করে বলা হয়, এটা কোনও বিদ্যুৎ বিভ্রাট নয়, লেজার লাইট বন্ধের প্রতিবাদেই আলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে ৷ এক দর্শনার্থী উজ্জ্বল ধর বলেন, "আলো বন্ধ এটা দেখে খারাপ লাগছে, এত সুন্দর মাতৃমূর্তি সামনে রয়েছে অথচ তাঁকে দেখতে পাচ্ছি না।"
- পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ সোমনাথ নন্দী বলেন, "তিন বছর ধরে আমরা এই লেজার শো'য়ের আয়োজন করে আসছি ৷ কিন্তু সপ্তমীর রাতে হঠাৎই চন্দননগর থানা থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় এই লেজার শো বন্ধ রাখতে হবে। প্রশাসনের এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে ছিলাম। গতকাল বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে জানানো হয় লেজার শো চালু থাকছে। অষ্টমীর সন্ধে থেকে আলো জ্বলবে ৷
চন্দননগর মধ্যাঞ্চল জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি (নিজস্ব ছবি) পুজো কমিটির তরফে আলোচনার বিষয় প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে চন্দননগর পুলিশ, কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি ও মধ্যাঞ্চল সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয় ৷ সেগুলি নিম্নরূপ-
- পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, পুকুরের ধারে বাঁশের যে ব্যারিকেড করা হয়েছে তার উচ্চতা একটু কম বলে উনি মনে করছেন এবং ব্যারিকেডটি দর্শকদের চাপে যাতে ভেঙে না-পড়ে তা দেখা প্রয়োজন।
- বাঁশের ব্যারিকেড এবং পুকুরের মাঝখানে স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতি প্রয়োজন ৷ যাতে কোনও দর্শক পুকুরে পৌঁছে যাওয়ার মতো সুযোগ না-পান ৷
- লেজার শো'তে কেবলমাত্র স্থির চিত্র দেখানোর অনুরোধ করা হয়েছে ৷ একইভাবে প্রত্যেকটি ছবি একটু বেশি সময় ধরে লেজারের পর্দায় ধরে রাখতে বলা হয়েছে ৷
- মধ্যাঞ্চল লেখা লেজারের পর্দায় সারাক্ষণ রাখা যাবে, যদি কোনও বিজ্ঞাপনের ব্যাপার থাকে সেটাও রাখা যাবে ৷ এবিষয়ে প্রশাসনের কোনও আপত্তি নেই।
- ফোয়ারার সঙ্গে আলোর খেলায় কোনও আপত্তি নেই ৷ কিন্তু তার সঙ্গে শব্দের ব্যবহার অত্যন্ত মার্জিতভাবে ব্যবহার করতে হবে ৷ যদি সম্ভব হয় আলো-ফোয়ারার খেলায় শব্দ ব্যবহার বন্ধ থাকলে প্রশাসন আশা করেছে ভিড়ের চাপ যথেষ্ট কম থাকবে।
- স্টেশন রোডের ওপর মধ্যাঞ্চল বারোয়ারির পুকুরের উপর লেজার শো'য়ের কারণে কোনওভাবেই যেন দর্শনার্থীদের যাতায়াত থেমে না-যায় ৷
- প্রয়োজনে দর্শনার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুলিশকর্মী পাঠানোতে যথাযথ সাহায্য দরকার ৷