পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

আর নয় ওষুধ, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এবার তাবিজেই হবে গর্ভনিরোধক ! - CONTRACEPTIVE IMPLANT

ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে হচ্ছে এই যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যবহার ৷ কী সেই পদ্ধতি, কীভাবে ব্যবহার হয় শরীরে ? শুনে নিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কথা ৷

Contraceptive implant
নয়া পদ্ধতিতে গর্ভনিরোধক ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 29, 2024, 5:36 PM IST

Updated : Dec 29, 2024, 6:34 PM IST

কলকাতা, 29 ডিসেম্বর:এবার তাবিজের খেল, তাও আবার বিজ্ঞান মতে । তাই আর ওষুধ নয়, চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাবিজে হবে গর্ভনিরোধক ৷ এমনই যুগান্তকারী পদ্ধতির ব্যবহার করছে ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ।

চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী, বর্তমানে প্রসূতি মৃত্যুর হার অনেকটাই বেড়েছে । অল্প বয়সে গর্ভধারণকেই এর অন্যতম কারণ হিসাবে দেখছেন চিকিৎসকরা । তাই সেইদিকে নজর দিতেই নয়া পদ্ধতির ব্যবহার হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে । যুগান্তকারী এই চিকিৎসা করছেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের গাইনোলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা, যা ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।

মেডিক্যাল কলেজে হচ্ছে এই যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যবহার (ইটিভি ভারত)

কী নাম এই নয়া পদ্ধতির ?

নয়া এই পদ্ধতিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়, কন্ট্রাসেপটিভ ইমপ্লান্ট । মহিলার হাতে ইনজেকশন দেওয়ার মতো সূচের আকারে দেখতে একটি বস্তু শরীরে প্রবেশ করানো হয়, যা শরীরে প্রবেশ করানোর পরেই কাজ শুরু করে । 4 মিটার লম্বা এবং 2 মিলিমিটার ব্যাসের এই যন্ত্র কাজ করে টানা 3 বছর ।

তাবিজে হবে গর্ভনিরোধক (নিজস্ব ছবি)

কীভাবে হয় গোটা চিকিৎসা পদ্ধতি ?

এই চিকিৎসায় প্রথমে হাতে ইনজেকশন দিয়ে জায়গাটা অবশ করে দেওয়া হয় । তারপরে ভালো করে পরিষ্কার করে সূচের মতো দেখতে বস্তুটি শরীরে প্রবেশ করানো হয় । এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে সময় লাগে মাত্র তিন মিনিট । তারপর ওই জায়গায় দুটো ব্যান্ডেজ করে দেওয়া থাকে । প্রথম ব্যান্ডেজটি খুলতে হয় দু'দিন পর । অপর ব্যান্ডেজটি পাঁচদিন পর খুলতে হয় । ফের সাত দিন বাদে একবার হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই হল এই অত্যাধুনিক চিকিৎসার নিয়ম । তবে সম্পূর্ণ পারদর্শী ছাড়া এই চিকিৎসা করা অসম্ভব ।

কতটা নিরাপদ এই চিকিৎসা ?

এই চিকিৎসা পদ্ধতি প্রসঙ্গে ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক চিকিৎসক প্রণব বিশ্বাস বলেন, "খুব অল্প সময়ে এই ফরেন বডিটি শরীরে প্রবেশ করানো হয় । এর ফলে কোন ব্যথাও লাগে না । হাসপাতালে ভর্তি থাকার প্রয়োজন পড়ে না । খুব সামান্য রক্তপাত আমরা দেখেছি । মাসিকে সাময়িক পরিবর্তন দেখা যায় । কিন্তু বড় কোনও সমস্যা এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি । এমনকি ফরেন বডি শরীরে প্রবেশ করার পরেও ইনফেকশন হওয়ার ভয়ও এক্ষেত্রে থাকে না ।"

এই পদ্ধতির নাম কন্ট্রাসেপটিভ ইমপ্লান্ট (নিজস্ব ছবি)

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে এই চিকিৎসা পেয়েছেন প্রায় 200 থেকে 300 তরুণী । এমনকি একবার মা হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার যদি কেউ গর্ভনিরোধকের সাহায্য নিতে চায়, তার জন্য এই চিকিৎসা সবথেকে কার্যকরী বলেই জানান চিকিৎসকরা ।

সূচের মতো দেখতে বস্তুটি শরীরে প্রবেশ করানো হয় (নিজস্ব ছবি)

এই বিষয় ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে উপাধ্যক্ষ অর্ঘ্য মৈত্র বলেন, "আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ওষুধের পরিমাণ কমানো । তার সঙ্গে ইউজার ফ্রেন্ডলি জিনিস ব্যবহার । তাই আমরা আবিষ্কার করেছিলাম বেরিয়ার কন্ট্রাসেপটিভ । যেমন কনডোম । কিন্তু সেখানে ফেলিয়র বেশি । তারপর আমরা এটা (কন্ট্রাসেপটিভ ইমপ্লান্ট) আবিষ্কার করলাম । 30 বছর ধরে আমরা এটা নিয়ে পড়াশোনা করেছি ৷ কিন্তু এবার হাতে কলমে কাজ করার সুযোগ আছে । ওষুধগুলোকে ছোট ছোট করে একটা ফরেন বডির মধ্যে দিয়ে শরীরে প্রবেশ করানো হয় এই পদ্ধতিতে ।"

Last Updated : Dec 29, 2024, 6:34 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details