কলকাতা, 19 জুন: গত বছরের অক্টোবরে রাজভবনের সামনে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে পাঁচদিন ধরে যে ধরনা কর্মসূচি হয়েছিল, তা কি নিয়ম মেনে হয়েছিল ? বুধবার সেই প্রশ্নই উঠল কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানিতে ৷ সেখানে বিচারপতি জানতে চাইলেন, শাসক দলের ওই ধরনা কর্মসূচির প্রেক্ষিতে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল ?
যে মামলার শুনানিতে এই প্রশ্নটি উঠেছে, সেটি দায়ের করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তিনি গত 13 জুন কলকাতা পুলিশের কাছে রাজভবনের সামনে ধরনায় বসার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন ৷ গতকাল মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশ বিরোধী দলনেতার আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ বুধবার এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে দু’দফায় মামলার শুনানি হয় ৷
প্রথমে বিচারপতি শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীকেই প্রশ্ন করেন, ‘‘ওখানেই কেন অবস্থানে বসতে হবে ? শাসক দল বসেছিল বলে ?’’ এর পর বিচারপতি সিনহা বলেন, ‘‘বিকল্প জায়গার সন্ধান নিয়ে আসুন, ভেবে দেখছি ।’’ দুপুর 1টায় ফের এই মামলার শুনানি হয় ৷ সেই সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে বলেন, ‘‘যে ভাষায় আবেদন করা হয়েছে, সেটা আবেদনপত্র হতে পারে না । ডেপুটি কমিশনারকে লেখা আবেদনে জোর ফলানোর ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে । সেখানে বক্তব্য, ‘আপনি রাজ্যের শাসক দলকে অনুমতি দিয়েছিলেন ৷ আমরা সর্বভারতীয় দল আমাদেরকে ও অনুমতি দিতে হবে ১৯ জুন কর্মসূচি পালন করার ।’ জয়েন্ট কমিশনার প্রশাসনিক কারণে অনুমতি দেননি ।’’
উল্লেখ্য, 100 দিনের কাজের বকেয়া আদায়ে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে রাজভবনের সামনে গত 5 অক্টোবর থেকে পাঁচদিন ধরনা দেওয়া হয়েছিল ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই ওই ধরনা হয় ৷ পরে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ওই ধরনা উঠে যায় ৷ রাজভবনের সামনে যেহেতু সারা বছর 144 ধারা জারি থাকে, তাই সেখানে শাসক দল ধরনার অনুমতি পেলে কেন রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল পাবে না, সেই প্রশ্ন বারবার তোলা হয়েছে এ দিনের শুনানিতে ৷
বিরোধী দলনেতার তরফে রাজ্য পুলিশের শাসক দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ত্বের অভিযোগ তোলা হয়েছে আদালতে । শুনানির প্রথম দফায় শুভেন্দুর তরফে আইনজীবী ময়ূখ মুখোপাধ্যায়ও একই প্রশ্ন তোলেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনার সময় কোনও বাধা নেই ৷ কিন্তু বিরোধী দলনেতার ক্ষেত্রে দ্বিচারিতা কেন পুলিশের ?’’