কলকাতা, 24 জুলাই: রাজ্যপালের মানহানি সংক্রান্ত মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর আপাতত কোনও স্থগিতাদেশ দিল না কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বুধবার বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মামলার শুনানি হয় ৷ আগামিকাল, বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে ৷
এর আগে, গত 16 জুলাই বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের সিঙ্গল বেঞ্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দুই নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হাসান সরকার এবং তৃণমূলের প্রাক্তন মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে তাঁদের মন্তব্যে লাগাম পরানোর নির্দেশ দেয় ৷ 14 অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এমন কোনও মন্তব্য করা যাবে না, যাতে রাজ্যপালকে অসম্মান, অপমান, অমর্যাদা প্রদর্শন হয় ৷
19 জুলাই সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাকিরা ৷ এদিন সেই মামলার শুনানিতে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "মামলায় সংবাদমাধ্যমের বক্তব্যকে ভিত্তি করা হলেও কোনও মিডিয়া হাউসকে মামলায় যুক্ত করা হয়নি ৷ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও রকম মানহানিকর মন্তব্য করা হয়নি ৷ জননেতা বা নেত্রী হিসাবে কিছু কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কিন্তু সেগুলি কোনওভাবে মানহানিকর হতে পারে না ৷ কারণ, এই বক্তব্য অনেক আগে থেকেই জনসমক্ষে আলোচনা হচ্ছে ৷ সংবিধানের 19 নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রত্যেকের বাক স্বাধীনতা আছে ৷ অবিলম্বে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করা হোক ৷"
বর্ষীয়ান আইনজীবী ও প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে বলেন, "সায়ন্তিকা বিধানসভায় শপথ গ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছিলেন ৷ কারণ, রাজভবনে সাম্প্রতিক কালে একটি ঘটনা ঘটার পর সেখানে যেতে তিনি ভয় পাচ্ছেন বলে জানান ৷ এখানে মানহানিকর বক্তব্য কোথায় ?"
এর আগে একক বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশে জানায়, আপাতত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে 14 অগস্ট পর্যন্ত কোনও রকম অসম্মানজনক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যদের ৷ একই সঙ্গে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, রাজ্যপাল একজন সাংবিধানিক প্রধান ৷ তাই দু'পক্ষের এই কাদা ছোড়াছুড়ি যাতে আর না বাড়ে, তার জন্য বিচারপতির মনে হয়েছে অবিলম্বে এই বিষয়ে আদালতের রাশ টানা উচিত ৷ সেই মতো তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বাকিদের কোনও অপ্রীতিকর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷