বিডিও এসে তালা ভাঙলেন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বুদবুদ, 7 ফেব্রুয়ারি: গ্রাম্য বিবাদের জেরে তালা ঝোলানো হয়েছিল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৷ একমাস পর এসে সেই তালা ভেঙে পরিষেবা স্বাভাবিক করলেন বিডিও ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদে ৷
জানা গিয়েছে, স্থানীয় ক্লাবের জায়গায় রয়েছে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র । ক্লাব সদস্যদের বিকল্প ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ৷ তবে আজও অধরা সেই প্রতিশ্রুতি । ক্ষোভে বুদবুদের পশ্চিম চন্ডিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র তালা মেরে দেয় এলাকাবাসীরা । প্রায় এক মাস হয়ে গেল এভাবে তালাবন্ধ অবস্থায় পরে ছিল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৷ এর ফলে সমস্যায় পরতে হয় গ্রামের গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের । চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের 12 তারিখ থেকে বন্ধ ছিল এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি । প্রায় একমাস পর মঙ্গলবার ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তালা ভাঙলেন আউসগ্রাম-2 এর বিডিও চিন্ময় ঘোষ । পুলিশকে এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ।
ক্লাবের সদস্য শেখ ফাইজুল অভিযোগ করেন, "কমিউনিটি হল করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্লাবের জায়গায় হয়েছিল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৷ এরপরে বহু বছর পেরিয়েছে ৷ কিন্তু আজও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ হয়নি । একাধিকবার প্রশাসনের আধিকারিকদের এবং উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিকদের জানানো হয়েছে ৷ তারপরেও কোন লাভ হয়নি । আমরা সাফ জানিয়েছি কমিউনিটি হল করে দিতে হবে ৷ না হলে জায়গা ফিরিয়ে দিতে হবে ।"
এলাকাবাসী মেরিনা খাতুন বলেন, "এলাকায় এই একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে । আর চিকিৎসা পরিষেবা পেতে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল বহু গর্ভবতী মহিলারা । এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এতদিন বন্ধ থাকায় গর্ভবতী মহিলাদের চরম সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল ।" উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী স্বাস্থ্য অফিসার সোমা ঘোষ দাবি করেন, জানুয়ারি মাসের 12 তারিখ তিনি যখন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসেছিলেন তখনই দেখেন তালা বন্ধ । তবে কারা এই তালা মেরেছে তিনি জানেন না । বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন তিনি ।
মঙ্গলবার সকালে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আউসগ্রাম 2 এর বিডিও চিন্ময় ঘোষ পৌঁছে যান ওই এলাকায় । উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তালা ভেঙে সচল করেন পরিষেবা । বিডিও চিন্ময় ঘোষ বলেন, "এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পরিষেবা পান গর্ভবতী মহিলারা । উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র যে এতদিন বন্ধ আমাকে জানানোটাও এলাকাবাসীর কর্তব্য । আমি খবর পাওয়া মাত্রই এলাকায় পৌঁছে স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক করেছি । যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।" সরকারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রায় একমাস ধরে বন্ধে পড়ে ৷ অথচ নজর পড়ল না স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের? তাহলে কি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরাই জানায়নি স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের? উঠছে সেই প্রশ্নই ।
আরও পড়ুন:
- একজন নার্স দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, চিকিৎসা পাচ্ছেন না রোগীরা
- বেহাল দশা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের, জমে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ
- উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অর্ধনির্মিত ভবন এখন পরিত্যক্ত বাড়ি, পরিষেবা না-পেয়ে ক্ষোভ গ্রামবাসীদের