কলকাতা, 4 অক্টোবর: রেল ব্রিজের গা-দিয়ে চলে গিয়েছে সরু গলি। সেখানেই এবার পুজো মণ্ডপে ফুটে উঠেছে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ। মণ্ডপে দেখানো হয়েছে সাম্প্রতিক ঘটনায় মা দুর্গা লজ্জায় দু'হাত দিয়ে চোখ ঢেকে রয়েছেন।
শক্তির প্রতীক তাঁর বাহন পশুরাজ সিংহও এমন পাশবিকতা ও হিংসা দেখে কার্যত লজ্জায় মাথা নত করে পাশে বসে। মায়ের পায়ের সামনেই রাখা হয়েছে নির্যাতিতার প্রতীকী দেহ। এভাবেই সেজে উঠেছে মণ্ডপ।
লজ্জায় মুখ ঢাকলেন মা দুর্গা (ইটিভি ভারত) মণ্ডপসজ্জায় আরও একটি জিনিস লক্ষ্য করা গিয়েছে ৷ তা হল- মায়ের আরেক পাশে বিরাট একটি প্রতীকী লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ঠিক উপরে রয়েছে চিকিৎসকের সাদা অ্যাপ্রন ও স্টেথোস্কোপ। শোকের আবহে মণ্ডপে কালো কাপড় দিয়ে ঘেরা । রাজ্যে ঘটে যাওয়া হিংসা-সন্ত্রাস রক্তের প্রতীক হিসেবে লাল আলো ব্যবহার হয়েছে মণ্ডপে। এমন ভাবনাকে মাথায় রেখেই মণ্ডপ গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উদ্য়োক্তারা ৷
মুখ ঢাকা মা দুর্গার (নিজস্ব ছবি) শ্রী শ্রী সরস্বতী ও কালীমাতা মন্দির পরিষদ পুজো কমিটি প্রতিবাদে মুখর হয়েছে। এবার তাদের পুজোর 5 বছর। এই পুজো 2020 সালে প্রতিষ্ঠা করেন বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। তিনি 2021-এ খুন হন শাসকদলের দুষ্কৃতীদের হাতে ৷ এমনটাই অভিযোগ। তারপর থেকে তাঁর দাদা বিশ্বজিৎ সরকার এই পুজোর দায়িত্ব নেন।
আরজি করের প্রতিবাদ কাঁকুড়গাছির মণ্ডপে (নিজস্ব ছবি) কাঁকুড়গাছি দুর্গাপুজোর থিম-
- 2021 সালে ভোট পরবর্তী হিংসার প্রতিবাদ জানিয়ে পুজোর থিম হয়েছিল।
- 2022 'মায়েদের কান্না রক্তাক্ত বাংলা' নামে থিম হয় ৷
- 2023 সালে ভারতমাতা মোদির হাতে দেশের ম্যাপ তুলে দিচ্ছেন ৷ এই থিম বানান তারা ৷
- 2024 আরজি করের নৃশংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের থিম 'লজ্জা'।
আইনি জটিলতায় রাজ্যের অনুদান দু'বছর ক্লাবের কাছে এসে পৌঁছয়নি বলেই জানিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। পুজোর অন্যতম প্রধান কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নারী নির্যাতনের ভাণ্ডার দিচ্ছেন। মাসে মাসে 500 হাজার করে দিচ্ছেন। আর রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে কামদুনি, হাঁসখালি, কাকদ্বীপ, আরজি কর, পার্ক স্ট্রিট ঘটে চলেছে। সম্প্রতি, হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় যেভাবে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের শিকার হলেন সেই ঘটনার প্রতিবাদ এবার আমাদের পুজোতে তুলে ধরেছি।"
তিনি আরও বলেন, "এই ঘটনা দেখে মা দু'হাত দিয়ে লজ্জায় মুখ ঢেকেছেন। পশুরাজ সিংহও লজ্জিত ৷ তাই মাথা নত করে আছেন সকলে। শোকের আবহে মণ্ডপ কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা। রক্তের বন্যা বোঝাতে ব্যবহার হয়েছে লাল আলো। এভাবেই উৎসবের মঞ্চকে প্রতিবাদ মুখর করে তুলতে চাই ৷"