ঝাড়গ্রাম, 2 অগস্ট: শতাব্দী প্রাচীন এক বটগাছকে পুনর্জীবন দিল ঝাড়গ্রাম কুমুদ কুমারী ইনস্টিটিউশনের প্রাক্তনীরা । হাইড্রা ও জেসিবি মেশিন দিয়ে শতাব্দী উপড়ে পড়া প্রাচীন বটগাছকে মাটি খুঁড়ে পুনরায় তার জায়গায় প্রতিস্থাপন করে দিলেন তাঁরা ।
প্রবল বৃষ্টিতে উপড়ে গেল শতাব্দী প্রাচীন গাছ (ইটিভি ভারত) বুধবার গভীর রাত থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয় ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে । বৃষ্টির ফলে বৃহস্পতিবার সকালে ঝাড়গ্রাম শহরের জেলাশাসকের অফিস সংলগ্ন ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের পাশের রাস্তায় থাকা একটি শতাব্দী প্রাচীন বট গাছ মাটি থেকে উপড়ে রাস্তার উপর পড়ে যায় । শতাব্দী প্রাচীন এই গাছের ডালপালায় সুভাষ পার্কের মোড় থেকে জেলখানা মোড় যাওয়ার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় । রাস্তার পাশে থাকা বিদ্যুতের পিলার ভেঙে গিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এলাকায় ।
বৃহস্পতিবারে প্রশাসনের তৎপরতায় শতাব্দি প্রাচীন বট গাছের ডালপালা কেটে রাস্তাটিকে সচল করা হয়। কিন্তু, শতাব্দী প্রাচীন বট গাছের কান্ডের আয়তন বিশাল হওয়ায় বট গাছটিকে শেষ পর্যন্ত কাটতে পারেনি প্রশাসনের নিযুক্ত করা কর্মচারীরা। সেই অবস্থায় বিষয়টি নজরে আসে ঝাড়গ্রাম কুমুদ কুমারী ইনস্টিটিউশনের প্রাক্তনীদের। তাঁরা দেখেন বটগাছের কিছুটা অংশ এখনও মাটিতে লেগে রয়েছে। তারপরে রাতারাতি তারা একজোট হয়ে বটগাছটিকে পুনর্জীবন দেওয়ার পরিকল্পনা নেন ।
শুক্রবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয় ঝাড়গ্রামে। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ের দুই প্রাক্তনী সুবীর ঘোষ তাঁর জেসিবি মেশিন নিয়ে এবং অমিত আগরওয়ল তাঁর হাইড্রা মেশিন নিয়ে হাজির হন শতাব্দী প্রাচীন বটগাছের কাছে । তারপর দুটির সাহায্যে মাটি খুঁড়ে গাছটিকে তার আগের জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হয় । বেশি করে মাটি, হরমোন ও সার দেওয়া হয়েছে গাছের গোড়ায় ৷ ফলে পুরনো মাটি ফিরে পায় গাছটি ।
ঝাড়গ্রাম কুমুদ কুমারী ইনস্টিটিউশনের প্রাক্তনীদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ঝাড়গ্রামের মানুষজন । বিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ডাঃ প্রসূন ঘোষ বলেন, "গতকাল প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারণে শতাব্দী প্রাচীন এই বটগাছটি উপড়ে পড়ে যায় । অরণ্য সুন্দরী ঝাড়গ্রাম সবুজের জন্য বিখ্যাত । তাই এই সবুজ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা প্রাক্তনীরা জেসিবি ও হাইড্রা মেশিন নিয়ে এসে গাছটিকে তার পুরনো জায়গায় প্রতিস্থাপন করেছি । তার পাশাপাশি আরেকটি নতুন বটগাছ রোপন করা হয়েছে । গাছটির গোড়ায় হরমোন ও সার দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস, এই প্রাচীন বটগাছটি তার প্রাণ ফিরে পাবে ।"