হায়দরাবাদ, 13 অক্টোবর: দেশের জার্সিতে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিনিধিত্ব করা যে কোনও অ্য়াথলিটের কাছেই স্বপ্ন ৷ ব্যতিক্রম নয় ক্রিকেটও ৷ এমন অনেক ক্রিকেটার আছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে যাঁরা দাপিয়ে খেলেও দেশের হয়ে দুর্ভাগ্যবশত কখনও ডাক পাননি ৷ আবার অনেকে আছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্য়ান্স করলেও দেশের জার্সিতে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি ৷ এই তালিকায় আকাশ চোপড়া, বিনোদ কাম্বলি, মনোজ তিওয়ারি যেমন রয়েছেন তেমনই ভারতের প্রাক্তন ব্য়াটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারও ৷
তবে এমন বেশ কিছু ক্রিকেটার রয়েছেন যাঁরা জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন বটে, কিন্তু জাতীয় দলের ক্যাপ হাতে ওঠেনি তাঁদের ৷ তালিকায় রয়েছেন দুই বঙ্গ ক্রিকেটারও ৷ একনজরে সেই তালিকা ৷
বাসিল থাম্পি: 2017 আইপিএলে সেরা প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটারের তকমা পেয়েছিলেন কেরলের এই ফাস্ট বোলার ৷ ওই বছরেই ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-20 সিরিজের দলে ডাক পেয়েছিলেন বাসিল থাম্পি ৷ কিন্তু জয়দেব উনাদকাট, মহম্মদ সিরাজদের টপকে জাতীয় দলের জার্সি পরে খেলার সুযোগ হয়নি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে 90টি উইকেটশিকারির ৷ এরপর ভারতীয় এ দলের হয়ে বেশ কিছুদিন খেললেও সেখান থেকেও পরবর্তীতে বাদ পড়েন তিনি ৷
ঈশ্বর পাণ্ডে:জাতীয় দলের একজন উপযোগী বোলার হয়ে ওঠার সব উপকরণ ছিল মধ্যপ্রদেশের এই ক্রিকেটারের ৷ 2012-13 রঞ্জি ট্রফিতে আট ম্যাচে 48 উইকেট নেওয়া ঈশ্বর পাণ্ডে সদস্য ছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসেরও ৷ 2014 সালে ভারতের নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ান-ডে ও টেস্ট দু'টি স্কোয়াডেই ডাক পেয়েছিলেন তিনি ৷ কিন্তু ঈশ্বরের ঈশ্বর সহায় হননি ৷ সফরে একটি ম্য়াচেও খেলার সুযোগ হয়নি এই বোলারের ৷ এরপর জাতীয় দলের দৌড় থেকেই হারিয়ে যান এই ক্রিকেটার ৷
রণদেব বসু: তালিকার তৃতীয় নামটি বঙ্গ পেসার রণদেব বসুর ৷ তাঁর প্রজন্মে ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলার ছিলেন তিনি ৷ 2006-07 রঞ্জি মরশুমে আট ম্যাচে 57 উইকেট তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তি ৷ তারই সুবাদে 2007 ইংল্যান্ড সফরে জাতীয় দলে ডাক পান রণদেব ৷ কিন্তু জাহির খান, আরপি সিং, এস শ্রীসন্থদের সঙ্গে লড়াইয়ে একাদশে জায়গা পাকা করতে পারেননি তিনি ৷
ধীরজ যাদব: তালিকার আরও এক দুর্ভাগ্যের নাম ধীরজ যাদব ৷ 2003-04 রঞ্জি মরশুমে 12 ইনিংসে 1066 রান করা ক্রিকেটারের তুখোড় ফর্ম দেখে 2004 ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্টের স্কোয়াডে তাঁকে জায়গা দেন নির্বাচকরা ৷ সচিন, দ্রাবিড়, সেহওয়াগ, লক্ষ্মণদের সঙ্গে লড়াইটা এমনিতেই সহজ ছিল না ৷ তবে সেই টেস্টে যাদবকে টপকে জাতীয় দলে আত্মপ্রকাশ হয় গৌতম গম্ভীরের ৷ এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো ফর্ম জারি থাকলেও জাতীয় দলে আর ডাক পাননি মহারাষ্ট্র ক্রিকেটার ৷
শিবশঙ্কর পাল: তালিকার দ্বিতীয় বঙ্গ ক্রিকেটার শিব শঙ্কর পাল ৷ বাংলার হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে 61 ম্য়াচে 220 উইকেট নেওয়া এই জোরে বোলার ভারতীয় এ দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন ৷ 2004 সালে একই বছরে জোড়া টেস্ট সিরিজে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিলেন তিনি ৷ মুম্বইয়ে অজিদের বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্ট এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দু'ম্য়াচের টেস্ট সিরিজ ৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের ভাগ্য হয়নি তাঁর ৷
সুনীল ভালসন: প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দিল্লি, তামিলনাড়ু ও রেলওয়েজের হয়ে খেলা এই ক্রিকেটার ডাক পেয়েছিলেন 1983 বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ৷ 75টি প্রথম শ্রেণির ম্য়াচে 212 উইকেট নেওয়া এই বাঁ-হাতি পেসার বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে দুই কিউয়ি ওপেনারকে আউট করে চমকে দিয়েছিলেন ৷ মনে করা হয়েছিল জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপে অভিষেক তাঁর পাকা ৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ভারতের হয়ে অভিষেক হয়নি সুনীল ভালসনের ৷
রাজেশ পাওয়ার: মুম্বইয়ের প্রাক্তন এই ক্রিকেটার রঞ্জি খেলেছেন বরোদা, অন্ধ্রপ্রদেশের হয়েও ৷ 84টি প্রথম শ্রেণির ম্য়াচে 281 উইকেট নেওয়া বাঁ-হাতি স্পিনার জায়গা করে নিয়েছিলেন 2007 বিশ্বকাপের প্রাথমিক 30 জনের স্কোয়াডে ৷ তবে সেখান থেকে চূড়ান্ত 15 জনের দলে জায়গা হয়নি তাঁর ৷ এমনকী ওই বছরেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট স্কোয়াডেও ডাক এসেছিল তাঁর ৷ কিন্তু অনিল কুম্বলে, হরভজন সিংকে সরিয়ে দলে জায়গা করে নেওয়া হয়নি রাজেশ পাওয়ারের ৷ এরপর আর জাতীয় দলে ডাকই পাননি তিনি ৷