হায়দরাবাদ, 10 মার্চ: প্রথমবার রাজ্যে রামনবমীতে ছুটি দিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ছুটি ঘোষণাকে অনেকেই ভোটের দিকে তাকিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত বলে লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেছেন ৷ এবার এই ছুটির বিরোধিতা করলেন সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন ৷ সোশাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে পোস্ট প্রবীণ শিল্পীর ৷
তিনি রবিবার সকালে লিখেছেন, "আর পারলাম না। রামনবমীতেও আমার রাজ্যে ছুটি। মানছি না। রামনবমী = জাতীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন দিবস। ওই দিন হবে আমার রাজ্যে ছুটির দিন। চমৎকার।" এরপর কবীর সুমন বলেছেন, "অনেক দিন আগে আমাদের গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন বোম্বের শিল্পীদের আমরা এত টাকা-সম্মান দিয়ে বাংলায় আনি কেন? কেন তাঁদের দিয়ে গান গাওয়াই? বোম্বের লোকেরা কি ওঁদের গণেশ পুজোয় বাঙালি শিল্পীদের নিয়ে যান? হিন্দি-হিন্দুত্বওয়ালাদের তোয়াজ করতে রামনবমীর ছুটি? মানছি না আমি। আমি বাধ্য হচ্ছি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতা করতে।"
এরপর পোস্টে তিনি আরও লেখেন, "এই সরকার বাংলা খেয়ালকে মান্যতা দিয়েছেন। তাঁদের কুর্ণিশ জানিয়েছি বারবার। কিন্তু এ রাজ্যের ভাষা বাংলা। সেই ভাষায় খেয়াল রচনা এবং গাওয়া শেখানো হবে এটাই তো স্বাভাবিক। কাজেই রাজ্য সরকার অস্বাভাবিক কিছু করেননি। তাঁদের করণীয় কাজের সীমা পেরিয়ে করেননি কিছু। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে রামনবমীকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা যদি সত্যিই করে থাকেন তাহলে আমি সরকারের এই ঘোষণার, এই নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।"
তাঁর কথায়,"বাংলায় খেয়াল রচনা ও গাওয়া শুরু করেছিলাম কোনও নেতা বা সরকারের মুখ চেয়ে নয়। বাংলা খেয়ালের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম একজন নাগরিক হিসেবে। অন্যায় আবদার করিনি। শারীরিক বিকলতা সত্ত্বেও আমি বাংলা খেয়াল নিয়ে কাজ করে যাব যতদিন পারব। চেষ্টা করব একটা একাডেমি তৈরি করে যেতে যা সরকার বা কোনও দল বা নেতার মুখাপেক্ষী থাকবে না। জয় বাংলা ৷ জয় বাংলা ভাষা ৷ জয় বাংলা খেয়াল ৷" নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতে পারে যে কোনও দিন ৷ তার আগে 17 এপ্রিল রামনবমীর ছুটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে নয়া তরজা ৷ তার মধ্যে বুদ্ধিজীবী তথা সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমনের এই প্রতিবাদ তাঁকে মমতার থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে কি? তা সময় বলবে ৷