কলকাতা, 16 ফেব্রুয়ারি: প্রবীর...দ্য আদার ল্যান্ড ৷ আদার ল্যান্ডই বটে - নাটকের জগতে বরাবর একটা অন্য ভূমিতেই বিচরণ করেছেন তিনি ৷ না, সচেতন ভাবে সবার থেকে আলাদা হওয়ার প্রচেষ্টায় নয় ৷ বাদল সরকার থেকে গ্রটস্কি - কিংবদন্তি নাট্য ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কাজ করেও নিজের অন্বেষণটা কখনও থামিয়ে দেননি ৷ কারণ ছেলেবেলা থেকেই তাঁর নাট্য দর্শন গ্রামবাংলাকে জড়িয়ে ৷ প্রবীর গুহর সেই সহজিয়া থিয়েটারের আঁতুড়ঘরের সন্ধান দিতে তাঁকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করলেন পরিচালক শঙ্খ ঘোষ ৷ তাঁর সেই গবেষণাধর্মী তথ্যচিত্র ইতিমধ্যেই নানা চলচ্চিত্র উৎসবে জিতে নিয়েছে সেরার সম্মান ৷ বৃহস্পতিবার নন্দনেও সবার প্রশংসা কুড়িয়ে নিল প্রবীর...দ্য আদার ল্যান্ড ৷
50 মিনিটের টানটান একটা ছবি ৷ শুরু এবং শেষ অবশ্য়ই নাট্যপরিচালক প্রবীর গুহ ৷ তাঁর নাট্য দর্শন, তাঁর পথ চলা, দেশের বিভিন্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁর ছাত্রছাত্রীদের অনুভূতি, তাঁদের নিয়ে কর্মশালা - একের পর এসেছে পরতে পরতে ৷ যা একটু একটু করে পরিচয় ঘটিয়েছে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীর গুহর সঙ্গে ৷
প্রবীর গুহর মতে, যা সত্যি নয়, তা শিল্প নয় ৷ একটা গাছের সঙ্গে কীভাবে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা যায়, কীভাবে মাটিতে কান পেতে তার নীচে নদীর স্রোতের শব্দ শোনা যায়, কীভাবে শরতের মেঘে আঁকিবুঁকি কাটা যায়, জীবনের এই সহজ ও মন ভালো করা তত্ত্বই গোটা ছবিজুড়ে গল্পের মতো বুঝিয়ে গিয়েছেন তিনি ৷ তাঁর কাছে এটাই থিয়েটার ৷
কখনও ধামসা বাজিয়ে চিৎকার করে গান গেয়েছেন, কখনও ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে জঙ্গলে হামাগুড়ি দিয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব এই মানুষটি ৷ সংলাপ, মেক-আপ, কস্টিউমের মতো কোনও কৃত্রিমতা নেই ৷ প্রকৃতির সঙ্গে আত্মস্থ হয়ে শরীর ও মননের দ্বারা সহজিয়া থিয়েটারের সন্ধানে আজও তাঁর খোঁজ চলছে নিরন্তর ৷ এই থিয়েটারের চলনের মধ্যে রয়েছে প্রতিনিয়ত নিজেকে খননের ভাষা ৷