কলকাতা, 25 সেপ্টেম্বর: রেডিওর পর ছোটপর্দা আর এবার ওটিটি-তেও আসছে মহামায়ার অসুর নিধনের কাহিনি 'মহিষাসুরমর্দিনী'। মুখ্য চরিত্রে রাজনন্দিনী পাল। সিরিজের পরিচালক সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়। প্রথমবার দুর্গার চরিত্রে অভিনয় থেকে পুজোর প্ল্যানিং ইটিভি ভারতের সঙ্গে দূরভাষে আড্ডা দিলেন অভিনেত্রী রাজনন্দিনী পাল।
ইটিভি ভারত: এই প্রথম মা দুর্গার ভূমিকায়। কাজের প্রস্তাব আসার পরের অনুভূতি কেমন ছিল?
রাজনন্দিনী: আমি খুব খুশি হয়েছিলাম ৷ তবে আমি এর বিন্দু বিসর্গ কিছুই জানতাম না। খুব অদ্ভুতভাবে ব্যাপারটা শুরু হয় ৷ আমাদের লাইন প্রোডিউসার শিবাজি দা'র সহকারী সুস্মিতা ৷ তিনি আমাকে মেসেজ করে নাচের কয়েকটা ভিডিয়ো পাঠাতে বলেন। আমি ভেবেছিলাম হয়ত হইচইয়ের নাচের কোনও ইভেন্ট আছে। তাই আমি বলিউড নাচের সেগমেন্ট ডকুমেন্ট করে পাঠাই ৷ পরে জানতে পারি ওটা দেখে ঠিক করেছে আমাকে মহালয়ায় কাস্ট করবে। খুব খুশি হলাম। তারিখ নিয়ে সমস্যাও হয় একটা সময়ে ৷ কাজটা না হওয়ার মতো জায়গায় চলে গিয়েছিল? কিন্তু ফাইনালি হয়।
ইটিভি ভারত: মা বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী ইন্দ্রাণী দত্ত। নিজেও টেলিভিশনে দুর্গা হয়েছেন। টিপস দিলেন মেয়েকে?
রাজনন্দিনী: মা আমাকে প্রত্যেক কাজেই টিপস দেন। আর এটাতে তো আরওই দিয়েছেন। কেন না মা এটাতে পারদর্শী।হইচইয়ের 'মহিষাসুরমর্দিনী'র কোরিওগ্রাফি করেছেন সুকল্যাণ ভট্টাচার্য । স্যারের স্টাইলটা একদম অন্যরকম। আমি আর মা আগেও ওঁর সঙ্গে কাজ করেছি আমাদের ট্রুপের জন্য। ওঁর সঙ্গে কাজ মানেই খুব হার্ড ওয়ার্ক। কিন্তু খুব সুন্দর করে শেখান। আর বাড়িতে প্র্যাকটিসের সময়ে মা স্ক্রিপ্ট পড়ে দিত আমাকে। এখানে অনেকগুলো রূপ করছি আমি। প্রত্যেকটারই ভাব আলাদা। মা গাইড না করলে পারতাম না।
ইটিভি ভারত: পুরনোগুলোতে চোখ বোলানো হয়েছে?
রাজনন্দিনী : হ্যাঁ, আমি তো পুরনো গুলো দেখতে শুরু করেছিলাম। মা বারণ করলেন। বললেন তুমি তো এগুলো আগেও দেখেছো। এবার নিজে স্ক্রিপ্ট পড়ে দেখো নিজের মতো করে আলাদা কী করতে পারো। যেখানে দর্শক ভাববে বাকিগুলো ছেড়ে আমরা রাজনন্দিনীর মহালয়াটা দেখব।
ইটিভি ভারত: আর কস্টিউম?
রাজনন্দিনী : কস্টিউমটা আমাকে পরানো নয় সেলাই করে দেওয়া হত। অনেক ফাইটিং, লাফানোর সিন আছে। রেডি হতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগত। আবার চেঞ্জের সময় খুব সাবধানে খুলতে হত। ওয়াশরুমেও যেতাম না ওই সময়টা আমি। কিন্তু কোনও অসুবিধাই মনে হত না ৷ পোশাকটা পরার পর অন্য জগতে চলে যেতাম।
ইটিভি ভারত: এবারের পুজোটা তার মানে বেশিই স্পেশাল। যেখানে নিজেই দুর্গার চরিত্রে আমজনতার সামনে।
রাজনন্দিনী: অবশ্যই স্পেশাল। অনেকটাই স্পেশাল। আমাদের বাড়িতে প্রথম দুর্গাপুজো যখন হয় তখন এরকম ফিলিংস হয়েছিল।
ইটিভি ভারত : কেনাকাটা কমপ্লিট?
রাজনন্দিনী: না। নিজেরটাও না, অন্যদেরটাও না।
ইটিভি ভারত : পুজোর প্ল্যান?
রাজনন্দিনী: কোনও প্ল্যান নেই। আরজি কর নিয়ে আন্দোলন চলবে। তার সঙ্গে কাজটা তো করতেই হবে। পুজোর মধ্যেও আন্দোলন চললে যেতে চাই। বাড়িতে বন্ধু, আত্মীয়দের সঙ্গেই থাকব। দিদার বাড়িতে দেখা করে আসব একদিন। ওখানেই খাব।
ইটিভি ভারত: পুজোর পাঁচদিনের ড্রেস প্ল্যানিং?
রাজনন্দিনী: ধুর, ওসব তো ম্যানেজার ঠিক করবে। তবে, অষ্টমীতে শাড়ি পরছি এটা ফাইনাল।
ইটিভি ভারত: পুজোয় প্রেম হয়েছে কখনও?
রাজনন্দিনী: এমনিই প্রেম হচ্ছে না তো পুজোয় প্রেম! প্রেম করতে গেলেও অনেক পরিশ্রম করতে হয় বুঝলে? বন্ধুরা বলেছে, কে কখন দেখছে একটু খেয়াল রাখতে হবে। তাকিয়ে একটু হাসতে হবে। আমি সেসব করি না। কোনও উৎসব অনুষ্ঠানে, পার্টিতে নাচতে শুরু করলে নাচতেই থাকি। তাই পুজো কেন ক্রিস্টমাস পার্টি, নিউনিয়ার পার্টি কখনই প্রেম আসে না আমার কাছে।
ইটিভি ভারত: পুজোয় কি বাড়িতেই খাওয়া দাওয়া নাকি ইটিং আউট?
রাজনন্দিনী : ইটিং আউট। আর বাড়িতেও খেলেও সেটা বাইরে থেকে আসে। আমার মাসিও রান্না করে পাঠায়।
ইটিভি ভারত: পুজোয় কলকাতার বাইরে যাওয়া হয়?
রাজনন্দিনী: না। পুজোয় কলকাতাতেই থাকি। আমার দুই অভিন্নহৃদয় বান্ধবী বাইরে পড়ছিল একটা সময়। সেই বার পুজোতে আমি ভালো ছিলাম না। ভেবেছিলাম পরের বার ওদের কাছে চলে যাব।...
ইটিভি ভারত : নতুন কাজ?
রাজনন্দিনী: কাজ আসছে। কিন্তু বলা যাবে না। বললে পরে বকুনি খেতে হয়। আমি সব রকমের কাজ করতে চাই। অন্য ভাষায় কাজ চাই। তবে, সিনেমা-সিরিজ সবই আসছে।