কলকাতা, 19 অক্টোবর: শোকের আবহ বিনোদন দুনিয়ায় ৷ দেবরাজ রায়ের পর প্রয়াত পরিচালক দেবকুমার বসু ৷ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শুক্রবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি ৷ কিংবদন্তি পরিচালক দেবকী বসুর একমাত্র পুত্র সন্তান তিনি ৷ এছাড়া তিনি নয়ের দশকের বিখ্যাত টেলিসিরিজ 'বিবাহ অভিযান'-এর নির্মাতা ছিলেন ৷ এদিন দুপুর 1টা নাগাদ তাঁর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মুদিয়ালির বাড়িতে ৷
বাবা দেবকী কুমার বসুর মতো তিনিও ছবি তৈরির স্বপ্ন দেখতেন ৷ তবে, বাংলা নয়, মণিপুরকে ছবির প্রথম স্বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি ৷ এর জন্য অনেক লড়াই ছিল তাঁর জীবনে ৷ প্রথমে অসম গিয়ে অনেক কষ্টে বানিয়েছিলেন প্রথম ছবি 'সংগ্রাম' ৷
সেই সময় মণিপুরে সিনেমা জনপ্রিয় হয়নি ৷ সেখানে চলচ্চিত্র তৈরি করেন তিনি ৷ তখন মণিপুরের টালমাটাল পরিস্থিতি ৷ লাগাতার যুদ্ধ-বিদ্রোহ দিকে দিকে ৷ দীর্ঘ অপেক্ষা, দীর্ঘ পথচলার পর মুক্তি পায় 'মাতামগি মণিপুর' অর্থাৎ 'আজকের মণিপুর' ৷ এর জন্য জাতীয় পুরস্কার পান তিনি ৷ তাঁকে মণিপুরি চলচ্চিত্রের জনক বলা হয় ।
এক সময়ের জনপ্রিয় টেলি সিরিজ ‘বিবাহ অভিযান’-এর পরিচালক ছিলেন দেবকুমার বসু ৷ তাঁর হাত ধরেই পরিচিতি তোতলা গণশা হিসেবে জনপ্রিয়তা পান অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তী ৷ তিনি বলেন, "এ মৃত্যু যন্ত্রণার ৷" জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন পরিচালক দেবকুমার বসু ৷ পরিচালকের অসুস্থতার খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন শঙ্কর চক্রবর্তী ৷ অসুস্থ পরিচালক কাউকে চিনতে না পারলেও, শঙ্কর চক্রবর্তীকে চিনতে পেরেছিলেন ।
সোশাল মিডিয়ায় পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী পরিচালক দেবকুমার বসুর মৃত্যুসংবাদ জানিয়ে লেখেন, "বাবা দেবকী কুমার বসু ৷ বাংলা সিনেমা জগতের কিংবদন্তি প্রবাদ পুরুষ ৷ সিনেমার কাজ তিনি তাঁর বাবার হাত ধরেই শিখেছিলেন ৷ কিন্তু বাংলায় তিনি সিনেমা পরিচালনা করলেও তাঁর বাবার ছবির এবং তাঁর ছবির সঙ্গে তুলনা করা হলে, পাছে তাঁর বাবার অস্বস্তি হয়, এই অতি বাস্তব কথাটা ভেবেই তিনি বাংলার পরিবর্তে তাঁর কর্মস্থল বেছে নিলেন মণিপুরে ৷ পরবর্তী সময়ে পরিচালক হিসেবে তিনি যথেষ্ট প্রশংসিত হন এবং নিজগুণে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার লাভ করেন ৷ মণিপুরের সিনেমার ইতিহাসে শ্রীদেবকুমার বসু'র নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ৷ বাঙালি দর্শকদের মনে তিনি চিরস্থায়ী হয়ে রইলেন তাঁর অমর সৃষ্টি বাংলা সিরিয়াল 'বিবাহ অভিযান'-এর মাধ্যমে ৷ আজ সকালে 91 বছর বয়সে তিনি চির বিদায় নিলেন ৷ তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করি ৷'