চেন্নাই, 20 মার্চ: প্রতি বছর নভেম্বরে চেন্নাইয়ের কেন্দ্রস্থলে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয় ৷ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায সেখানকার মানুষ ভয়ে ভয়ে থাকেন ৷ এই অঞ্চলের বিজ্ঞানীরা সুনামি এবং ঝড় সম্পর্কে আগে থেকে বাসিন্দাদের সতর্ক করেন । কিন্তু তাঁরা কী করে এই প্রাকৃতিক বিপদের পূর্বাভাস দেন? ইটিভি ভারত এর পিছনের বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে চেন্নাইয়ের পাল্লিকারনাইতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজি (এনআইওটি)-র বিজ্ঞানীদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল ।
এনআইওটি আর্থ সায়েন্সেস মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিকভাবে সমুদ্রের উপর গবেষণা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে আবহাওয়া, ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তন, ঝড়, সুনামি পর্যবেক্ষণ করার কাজ করে । 1996 সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল ডেটা বয় প্রোগ্রাম এই প্রচেষ্টায় একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করছে । এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল, ভারত মহাসাগরে অ্যাঙ্কর মনিটরিং সিস্টেম ইনস্টল করা, যা ডেটা বয় নামে পরিচিত ৷ এগুলি দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা । এই ডেটা বয়গুলি সেন্সর দিয়ে সজ্জিত যা আবহাওয়া এবং সমুদ্রের পরিবর্তনগুলি পর্যবেক্ষণ করে ।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজির মহাসাগর পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বিজ্ঞানী এম আরুল মুথিয়া ইটিভি ভারতকে বলেছেন, এই ডেটা বয়গুলি 15টি জায়গায় ইনস্টল করা হয়েছে ৷ 1997 সাল থেকে আমরা ভারত মহাসাগর এবং আরব সাগর অঞ্চলে ডেটা বয় ইনস্টল করছি এবং তথ্য গ্রহণ করছি । ৷" তিনি জানান, সাতটি সুনামি সনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচটি বঙ্গোপসাগরে এবং দুটি আরব সাগরে রয়েছে এবং পর্যবেক্ষণ করছে । এই মেশিনগুলি দ্বারা প্রদত্ত তথ্যগুলি নেওয়া হয়। সেগুলি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসে পাঠানো হয় ৷ তারা আবহাওয়া বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগগুলিতে সেই তথ্য পাঠায় ।
প্রক্রিয়াটি আরও ব্যাখ্যা করে বিজ্ঞানী বলেছেন, "উপগ্রহগুলি হল একমাত্র মাধ্যম যার দ্বারা গভীর সমুদ্রের যন্ত্রগুলি উপকূল-ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে এবং এই যন্ত্রগুলি থেকে তথ্য প্রতি তিন ঘণ্টায় উপগ্রহগুলিতে প্রেরণ করা হয় । সমুদ্রে এই ডিভাইসগুলির নিরবচ্ছিন্ন অপারেশনের জন্য দুটি ব্যাটারি স্থাপন করা হয়েছে । এর মধ্যে একটি সূর্যের আলো থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করছে ৷ সৌর ব্যাটারি কাজ করা বন্ধ করলে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করে ।"