নয়াদিল্লি, 1 ফেব্রুয়ারি: কয়েকমাস বাদেই লোকসভা নির্বাচন ৷ তার আগে পেশ হল বিজেপি সরকারের শেষ কেন্দ্রীয় বাজেট ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে ফের ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে এই বাজেটে সমাজের মূল চারটি শ্রেণি - দরিদ্র, কৃষক, মহিলা ও যুবদেরকে শক্তিশালী করার উপর জোর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ৷ বৃহস্পতিবার 58 মিনিটের বাজেট বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, "আমাদের সরকার উন্নয়নের একটি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করছে যা সর্বাঙ্গীণ, সর্বব্যাপী এবং সর্বজনীন । এটি সমাজের সবস্তরের সমস্ত জাতি এবং মানুষের জন্য ।"
ভোটারদের মধ্যে চারটি মূল শ্রেণির মানুষের জন্য সরকারের চিন্তাভাবনার ছবি তুলে ধরে নির্মলা সীতারামন বলেন, "আমাদের প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, আমাদের চারটি প্রধান শ্রেণির মানুষের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে । তারা হল, দরিদ্র, মহিলা, যুব এবং অন্নদাতা অর্থাৎ কৃষক । তাদের চাহিদা এবং তাদের আকাঙ্খা ও তাদের কল্যাণ আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার । তাদের উন্নতি ছাজ়া দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। সমাজে চার শ্রেণির মানুষেরই প্রয়োজন এবং তাদের জীবনকে উন্নত করার জন্য তারা সরকারী সহায়তা পাবে । তাদের ক্ষমতায়ন এবং সুস্থতা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে ।"
সমাজের মূল চার শ্রেণির মানুষের জন্য বাজেটে কী আছে?
- ভারতের দরিদ্রদের জন্য কল্যাণমূলক ব্যবস্থা - গরীব কল্যাণ
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, "দরিদ্র মানুষের কল্যাণই দেশের কল্যাণ। প্রাপ্যতার মাধ্যমে দারিদ্র্য মোকাবিলা করার পূর্বের পদ্ধতির ফলে খুবই ভালো ফলাফল পাওয়া গিয়েছে । বহুমাত্রিক দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে সরকার 25 কোটি মানুষকে সহায়তা করেছে ।" দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য অতীত এবং বর্তমান ব্যবস্থা ও পরিকল্পনা সম্পর্কে কথা বলার সময় নির্মলা সীতারামন বলেন, সরাসরি বেনিফিট ট্রান্সফার ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী-জন ধন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে 34 লক্ষ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে ৷ যার ফলে 2.7 লক্ষ কোটি টাকা সঞ্চয় হয়েছে । যা জনগণের কল্যাণে আরও তহবিল প্রদানে সাহায্য করেছে । রাস্তায় যারা ফেরি করে সেইসব বিক্রেতারা সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের অধীনে 78 লক্ষ টাকার সহায়তা পেয়েছেন বলে অর্থমন্ত্রী জানান ৷
- কৃষকদের জন্য কল্যাণমূলক ব্যবস্থা - অন্নদাতা
নির্মলা সীতারামন প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প পিএম কিষান সম্মান নিধির কথাও উল্লেখ করেছেন। 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘোষণা করা হয়েছিল ৷ তিনি বলেছেন যে 11.8 কোটি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন এবং 4 কোটি কৃষক প্রধানমন্ত্রী শস্য বিমা প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন । তাঁর কথায়, ইলেকট্রনিক ন্যাশনাল এগ্রিকালচার মার্কেট 1361টি মান্ডিকে একীভূত করেছে এবং 1.8 কোটি কৃষককে 3 লক্ষ কোটি টাকার ট্রেডিং ভলিউম দিয়ে পরিষেবা প্রদান করেছে । এগুলি অন্যান্য অনেক কর্মসূচির পাশাপাশি দেশ ও বিশ্বের জন্য খাদ্য উৎপাদনে 'অন্নদাতা'কে সহায়তা করছে বলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দাবি করেন ৷
নির্মলা সীতারামন সমস্ত কৃষি-জলবায়ু অঞ্চলে বিভিন্ন ফসলে ন্যানো ডিএপি প্রকল্পের সম্প্রসারণেরও ঘোষণা করেছেন এবং সরিষা, চিনাবাদাম, তিল, সয়াবিন এবং সূর্যমুখীর মতো তেল বীজে স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য তৈলবীজের জন্য একটি মিশনও ঘোষণা করেছেন । তিনি বলেন, "সরকার তার দুগ্ধ ও মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প আরও জোরদার করবে ।"
- নারী শক্তির প্রতি দৃষ্টি আরোপ
নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শক্তির উপর জোর দেন নির্মলা সীতারামন ৷ বাজেট বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় সরকারের নারী কল্যাণমূলক পদক্ষেপ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, উদ্যোগপতি, জীবনযাত্রার সহজতা এবং তাদের জন্য মর্যাদার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন গত দশ বছরে গতি পেয়েছে । মহিলা উদ্যোক্তাদের 30 কোটি মুদ্রা যোজনা ঋণ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান নির্মলা সীতারামন ৷