নয়াদিল্লি, 23 ডিসেম্বর: দু’টি পরিবার মিলে দেখেশুনে পাত্র-পাত্রীর বিয়ে দেবে ৷ সেই দিন প্রায় শেষের পথে ৷ এখন নিজে দেখে বিয়ের যুগ ৷ যতদিন যাচ্ছে তাই প্রেম করে বিয়ের চল দিন দিন বাড়ছে ৷ কিন্তু কোথাও হয়তো ছেলে-মেয়ের ভালোবাসার মানুষকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারছেন না বাবা-মা ৷ তাঁদের চিন্তা বাড়ছে ৷ তাই তো তারা শরণাপন্ন হচ্ছেন গোয়ান্দাদের ৷ আর এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে ভারতীয়দের মধ্যে ৷
হ্যাঁ, অবাক হলেও এটাই সত্যি ৷ অল্পবয়সি প্রেমিক-প্রেমিকা যখন বিয়ের মতো বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইছেন, তখন তাঁদের পরিবার পুরোহিতের বদলে দ্বারস্থ হচ্ছেন গোয়েন্দাদের ৷ আবার যে সে গোয়েন্দা নয়, যাঁরা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোয়েন্দাগিরি করতে পারবেন, তাঁদের কাছে যাচ্ছে বিভিন্ন পরিবার ৷
আর তাই তো এখন ভারতে বিবাহসংক্রান্ত গোয়েন্দাদের রমরমা ৷ এমনই এক গোয়েন্দা হলেন দিল্লির ভাবনা পালিওয়াল ৷ নয়াদিল্লির এক মলের একটি বেনামী অফিস থেকে তিনি গত 20 বছর ধরে তাঁর এজেন্সি চালাচ্ছেন ৷ 48 বছর বয়সি ভাবনার সংস্থার নাম তেজস ডিটেকটিভ এজেন্সি ৷ ভাবনা পালিওয়াল জানাচ্ছেন, তিনি ওই বেনামী অফিস থেকেই হবু বর বউয়ের উপর নজর রাখেন ৷ ভারতে বিবাহসংক্রান্ত গোয়েন্দাগিরি একটি বিকাশমান শিল্প ৷ কারণ, এখন তরুণ প্রজন্ম অ্যারেঞ্জের বদলে লাভ ম্যারেজের দিকে বেশি ঝুঁকছে ৷
স্বামীর উপর গোয়েন্দাগিরি মহিলার:এই গোয়েন্দা বলেন, "ব্যবসা আগের চেয়ে অনেক ভালো চলছে এখন । আমার টিম প্রতি মাসে প্রায় আটটি বিবাহসংক্রান্ত গোয়েন্দাগিরির কেস নেয় । সম্প্রতি একজন স্ত্রী তাঁর স্বামীর বিষয়ে খোঁজখবর নিতে আমাদের দ্বারস্থ হন ৷ তদন্তে ধরা পড়ে মহিলার স্বামী বেতন নিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন ৷ লোকটি স্ত্রীকে বলেছিলেন যে, তিনি বছরে প্রায় 70 হাজার 700 মার্কিন ডলার আয় করেন ৷ কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি যে, তিনি বছরে 7070 মার্কিন ডলার টাকা উপার্জন করেন ।"
হবু জামাইয়ের উপর নজরদারি: নয়াদিল্লির এক অফিস কর্মী শীলার (নাম পরিবর্তিত) কথায়, তাঁর মেয়ে প্রেমিককে বিয়ে করতে চাওয়ার পর তিনি ভাবনা পালিওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং মেয়ের প্রেমিকের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার কথা বলেন৷ শীলা বলেন, "আমার বিয়ে নিয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা ছিল ৷ আমি চাইনি তেমনটা আমার মেয়ের সঙ্গে হোক ৷ যখন আমার মেয়ে বলল যে সে প্রেমিককে বিয়ে করতে চায়, তখন আমি তাঁকে সমর্থন করতে চেয়েছিলাম ৷ কিন্তু ছেলেটির সম্বন্ধে সঠিক যাচাই ছাড়া আমি তাঁদের বিয়ে দিতে চাইনি ।"
বিবাহসংক্রান্ত গোয়েন্দাগিরিতে খরচ:একজন গোয়েন্দা নিয়োগ করতে 100 থেকে 2 হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে ৷ তবে অবশ্যই এই খরচ নির্ভর করবে গোয়েন্দাবৃত্তির উপর । আপনি কী ধরনের খোঁজ খবর চাইছেন, তার উপর ভিত্তি করে ধার্য হবে খরচের বিষয়টি ৷
তবে শুধু ছেলে-মেয়েদের জন্য চিন্তিত বাবা-মা নয়, হবু বর বা বউ সঙ্গীর বিষয়ে খোঁজখবর নেন ৷ তাদের সম্পর্কে যাচাই করার চেষ্টা করছেন । কেউ কেউ তাঁদের হবু স্বামী বা স্ত্রীর ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করতে উদ্যত হচ্ছেন ৷ অথবা, বিয়ের পরে স্বামী বা স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হতে সন্দেহের বশে গোয়েন্দাদের নিয়োগ করছেন ৷