লখনউ, 28 জানুয়ারি:বারাণসীতে জ্ঞানবাপী মসজিদ প্রাঙ্গণে একটি হিন্দু মন্দির থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার পর দাবি করেছিল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) ৷ সমীক্ষার সেই রিপোর্ট তারা জেলা আদালতে পেশও করেছে ৷ তবে সেই রিপোর্ট মানতে নারাজ অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (এআইএমপিএলবি) ৷
এএসআইয়ের দাবিগুলিকে খারিজ করে দিয়ে একটি বিবৃতিতে এআইএমপিএলবি-র এগজিকিউটিভ সদস্য কাসিম রসুল ইলিয়াস বলেন যে, এএসআই রিপোর্ট এই বিতর্কিত মামলায় অকাট্য প্রমাণ নয় । সংবাদমাধ্যমে এএসআইয়ের রিপোর্ট প্রকাশ করায় হিন্দু পক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগও এনেছেন তিনি ৷ তিনি বলেন, "এই কাজ করে বিরোধী পক্ষ (হিন্দু পক্ষ) সমাজে অরাজকতা এবং নিরাপত্তাহীনতার বোধ তৈরি করেছে ৷"
ইলিয়াসের কথায়, "হিন্দু সাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলি জ্ঞানবাপী মসজিদ সম্পর্কে বহু বছর ধরে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে । সর্বশেষ উদাহরণ হল এএসআই রিপোর্ট, যা তারা আদালতে দাখিল করেছে ৷" তাঁর অভিযোগ, কয়েক মাস আগে হিন্দু পক্ষ সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করার যথাসাধ্য চেষ্টা চালায় ৷ সমীক্ষা দল তার রিপোর্টে জলাধারে উপস্থিত ঝরনাটিকে 'শিবলিঙ্গ' হিসাবে বর্ণনা করেছে ।
হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু শংকর জৈন এএসআই রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে দাবি করেন যে, সপ্তদশ শতকে একটি হিন্দু মন্দির ভেঙে জ্ঞানবাপী মসজিদ নির্মিত হয়েছিল তার প্রমাণ রয়েছে । তাঁর এই মন্তব্যের পরই কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড ৷
এ দিকে, জ্ঞানবাপী মসজিদ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটির (এআইএমসি) একজন কর্মকর্তা বলেন যে, তিনি নিজে এবং তাঁর আইনি দল (রিপোর্টটি) সঠিকভাবে না পড়া পর্যন্ত তিনি ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা রিপোর্ট সম্পর্কে কোনও কথা বলবেন না । তবে রিপোর্টে তিনি সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন । এআইএমসির যুগ্মসচিব এসএম ইয়াসিন বলেন, "যতক্ষণ না আমি এবং আমার আইনজীবীদের দল এই রিপোর্টটি পড়ব, আমি এএসআই রিপোর্টের বিষয়ে কিছুই বলব না । রিপোর্টটি পড়ার পরেই আমরা এ বিষয়ে কথা বলব ।"
এআইএমসির প্রতিনিধিত্বকারী কাউন্সেল আখলাক আহমেদ বলেন, "আমরা সমীক্ষা রিপোর্টটি পড়া শুরু করেছি এবং কয়েকটি প্রাথমিক পৃষ্ঠা পর্যালোচনা করেছি । এএসআই সমীক্ষা রিপোর্টটি 839 পৃষ্ঠার রয়েছে । এটি পড়া শেষ করতে কয়েক দিন সময় লাগবে । এখনও পর্যন্ত, আমাদের আইনি দল বিষয়টি নিয়ে কোনও বৈঠক করেনি । তবে আমরা শীঘ্রই একটি সভা করব । আমরা কেন এতে অসন্তুষ্ট তা নিয়ে আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য-সহ মন্তব্য করব ৷"
আরও পড়ুন:
- জ্ঞানবাপী মসজিদের জায়গায় বড় হিন্দু মন্দির ছিল, এএসআই-এর রিপোর্টে দাবি
- জ্ঞানবাপী নিয়ে মসজিদ কমিটির মামলা খারিজ এলাহাবাদ হাইকোর্টের
- জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার রিপোর্ট আদালতে জমা দিল এএসআই