পটনা, 28 জানুয়ারি: রাজনীতি 'বেডফেলো' তৈরি করে বলে কথিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার যেভাবে ফের মিলিত হয়েছেন, তাতে এমন অদ্ভুত প্রেম-ঘৃণার রসায়নের নয়া ব্যাখ্যা মিলেছে। পাশাপাশি এই লাইনগুলিকেও আরও প্রাসঙ্গিক করে দিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নীতীশ কুমার ফের একবার নিজের দাবিদারি পেশ করছেন ৷ বিহার বিধানসভায় এনডিএ নেতা হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছেন ৷ একইসঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকে 'অপ্রত্যাশিত ফোন কল' পেয়েছেন ৷ শুধু তাই নয়, নীতীশের দাবি, তাঁকে এনডিএ-তে আরও একবার ফিরে আসার জন্য অভিনন্দনও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পদত্যাগ করার পরে নীতীশ কুমার বলেন, “আরজেডি'র সঙ্গে কাজ মসৃণভাবে চলছিল না। আমরা প্রতিটি দলের নেতাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি এবং তারাও একই কথা বলেছেন ৷ এরপরই আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছি ৷" নীতীশ আরও বলেন, "আমরা একটি জোট (ইন্ডিয়া জোট) গঠন করেছিলাম কিন্তু তারা একটা কাজও করেনি ৷ সেই জোটের সঙ্গে কাজ করা সহজ ছিল না। তারা অনেক বিবৃতি দিচ্ছিল। আমি চুপচাপ তাকিয়েছিলাম। তারা অনেক কিছু বলেছে কিন্তু আমি বিহারের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছিলাম ৷”
যদিও ক্ষমতায় থাকার জন্য একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আনুগত্য বদলানোর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে নীতীশ কুমারের। 1977 সালে ছাত্র রাজনীতি থেকে হাতেখড়ি নীতীশের ৷ 1998 সালে প্রথম তিনি সমতা পার্টি থেকে বিজেপির সঙ্গে সখ্য তৈরি করেন ৷ 1996 সালে জর্জ ফার্নান্ডেজের হাত ধরেছিলেন ৷ এরপর অবশ্য পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি নীতীশকে ৷ 1999 সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের মন্ত্রী হন। কেন্দ্রে প্রথমে কৃষিমন্ত্রী পরে রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন নীতীশ ৷
2000 থেকে 2022 সালের মধ্যে নীতীশ কুমার আটবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। এবার নিয়ে নবমবার শপথ নিলেন তিনি। বিহারের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের রাজনৈতিক ইউ-টার্নের টাইমলাইন দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে কেন তাঁকে ভারতের রাজনীতিতে 'পল্টুরাম' বলা হয়ে থাকে ৷
মার্চ 2000:রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) সুপ্রিমো লালু প্রসাদ যাদবের শাসনের অবসান ঘটিয়ে 3 মার্চ, 2000-এ প্রথমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেন নীতীশ কুমার। তাঁকে সেই সময় সমর্থন করেছিল বিজেপি। যদিও তিনি মাত্র সাতদিন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সরকার ভেঙে যায়। এর কিছুদিন পর 2003 সালে, নীতীশ কুমার শরদ যাদবের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জনতা দল (ইউনাইটেড) গঠন করেন।
নভেম্বর 2005:নীতীশকুমার বিজেপির সমর্থনে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন । সেবার পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলেন জেপি নারায়ণের পাঠশালায় রাজনীতিতে শেখা নীতীশ ।
নভেম্বর 2010:তিনি আবার বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন, কিন্তু এবার তার শাসনকাল 19 মে, 2014 পর্যন্ত মাত্র সাড়ে তিন বছর স্থায়ী হয়েছিল।