পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

বন্ধ থাকে 364 দিন, বছরে একদিনই ভক্তদের দর্শন দেন একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব - EKLINGESHWAR MAHADEV

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 5, 2024, 1:29 PM IST

Updated : Aug 5, 2024, 2:02 PM IST

Sawan Somwar 2024: জয়পুরে এমন দু'টি শিব মন্দির রয়েছে, যার দরজা বছরের 364 দিন ভক্তদের জন্য বন্ধ থাকে ৷ কিন্তু কেন ? বছরের কোন দিন খোলা হয় এই মন্দির ? জানতে পড়ুন বিশেষ এই প্রতিবেদন ৷

Sawan Somwar 2024
জয়পুরের একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দির (Etv Bharat)

জয়পুর, 5 অগস্ট: চলছে শ্রাবণ মাস ৷ এই মাসকে শিবের মাস হিসেবে ধারা হয় ৷ সারা শ্রাবণ মাস ধরে যখন দেশের ছোট-বড় সমস্ত শিব মন্দিরগুলিও সেজে ওঠে, তখন রাজস্থানের জয়পুরের ছোট কাশীতে এমন দুটি শিব মন্দিরের ছবিটা ভিন্ন ৷ কারণ এই দু'টি মন্দিরে বছরের 364 দিনই ভক্তদের প্রবেশ নিষেধ ৷ একটি শঙ্করগড়ে (মতি ডুংরি) একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব ৷ অন্যটি সিটি প্যালেসে রাজরাজেশ্বর মহাদেব। সারা বছরে মাত্র একদিন ভক্তদের জন্য খোলা হয় এই মন্দির দু’টি ৷

তবে এই মন্দির বন্ধ থাকা নিয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক কাহিনী লোকমুখে প্রচলিত আছে ৷ এই মন্দিরের দেবতার দর্শন পেতে গেলে হাজার হাজার বছর অপেক্ষা করতে হয় ভক্তদের ৷ এই শঙ্করগড়ে (মতি ডুংরি) একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দিরকে অলৌকিক মন্দিরও বলা হয় ৷ এই মন্দরিরে শিব কাহিনী আরও ভক্তদের হৃদয়ে শিহরণ জাগায় ৷ শিবরাত্রির দিন এই মন্দিরের দেবতার দর্শন পেতে পুণ্যার্থীরা মাঝরাত থেকে ভিড় জমান ৷

কথিত আছে, সমস্ত শিব ভক্তই একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দির খোলার জন্য বছর ভর অপেক্ষা করেন ৷ বছরে একদিন অর্থাৎ শিবরাত্রির দিনই ভক্তদের জন্য খোলা হল এই মন্দির ৷ মহাশিবরাত্রির দিন গভীর রাত থেকেই এখানে ভক্তদের দীর্ঘ লাইন পড়ে। এই মন্দিরে পৌঁছতে ভক্তদের এক কিলোমিটার চড়াই-উতরাই পেরত হয়। ঐতিহাসিক দেবেন্দ্র কুমার ভগতের মতে, এই মন্দিরটি সওয়াই জয় সিংয়ের সময়ে তৈরি।

এই শিবলিঙ্গ আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র করা হয়েছিল। শিবের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় শঙ্করগড়। পরে, সওয়াই জয় সিং-এর কনিষ্ঠ পুত্র মাধো সিং তাঁর মাতৃগৃহ উদয়পুরের আদলে এখানে একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দির গড়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন ৷ তারপর থেকেই শঙ্করগড়ের নাম হয় একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব।

একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পৌরাণিক এক কাহিনী । কথিত আছে, বর্তমানে যেখানে এই একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দির রয়েছে, সেখানে আগে শিবলিঙ্গ-সহ সমগ্র শিবের পরিবার বাস করত ৷ কিন্তু বেশকিছু দিন পর ওই মন্দির থেকে শিবের পরিবার কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়। পরে এখানে শিবের পরিবার (পার্বতী, গণেশ-সহ অন্যান্য দেব-দেবীর মূর্তি) প্রতিষ্ঠিতা করা হয় ৷ কিন্তু, এর কিছুদিন পর ফের দেব-দেবীর মূর্তি অদৃশ্য হয়ে যায় ৷ তখন থেকেই একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দিরকে একটি 'অলৌকিক মন্দির' বলা হয়ে থাকে ৷ এরপর থেকে এই মন্দিরে শুধু মাত্র মহাদেব বিরাজমান ৷

আরও এক মন্দির হল রাজরাজেশ্বর মন্দির ৷ জয়পুরের রাজারা এই মন্দিরের নির্মাণ করেছিলেন ৷ এই মন্দিরটি শুধুমাত্র শিবরাত্রি এবং গোবর্ধন পূজার দিনে খোলা থাকে। সিটি প্যালেসে বর্তমান রাজরাজেশ্বর মন্দিরটি ছিল মহারাজা রাম সিংয়ের ব্যক্তিগত মন্দির। তিনি শিবের মহিমান্বিত রূপ কল্পনা করে এই মন্দির তৈরি করেছিলেন। এখানে ভগবান ভোলেনাথ সোনার সিংহাসন ও সোনার মুকুট পরে আছেন। নেপাল থেকে আনা পাখিরাজের ছবিও এখানে রয়েছে। ঐতিহাসিক দেবেন্দ্র কুমার ভগত জানান, এখানে ভগবান শিবের ভুতেশ্বর রূপের পরিবর্তে রাজেশ্বর রূপ দেখা যায়।

এই দু’টি শিব মন্দিরে নিয়মিত পুজো হলেও ভক্তদের জন্য কয়েকদিন খোলা থাকে ৷ সিটি প্যালেসের ধর্মীয় কর্মকর্তারা রাজরাজেশ্বর মন্দিরে নিয়মিত ভগবানের সেবা করেন। একইভাবে, একলিঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দিরের জন্য রাজপরিবার থেকে একজন পুরোহিত নিয়োগ করা হয়েছে। মহাশিবরাত্রির দিন চার ঘণ্টার বিশেষ পুজো হয়। সারা বছর ভক্তদের জন্য মন্দিরের বন্ধ থাকে ৷

Last Updated : Aug 5, 2024, 2:02 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details