নয়াদিল্লি, 16 সেপ্টেম্বর: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার রেশ পৌঁছল এবার দিল্লিতে ৷ কলকাতার চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও করেছেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে।
সোমবার প্রেসক্লাব অফ ইন্ডিয়ায় সাংবাদিক বৈঠক করে সিনিয়র চিকিৎসকরা আন্দোলনকারীদের নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ৷ এদিন শুরুতেই চিকিৎসকরা বলেন, "আমরা এই ধরনের সমস্ত জঘন্য অপরাধের তীব্র নিন্দা জানাই। এই অপরাধটি পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের মধ্যে যোগসূত্রের ফলস্বরূপ ৷" এদিন চিকিৎসক সিদ্ধার্থ বলেন, "বাংলায় ডাক্তাররা নিরাপদ নন ৷ যেখানে ডাক্তাররাই নিরাপদ নন সেখানে সাধারণ রোগীদের অবস্থা কী হবে !" একই সঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, "এই জুনিয়র ডাক্তারদের পরে টার্গেট করে খুন করা হতে পারে ! ছাত্রসংসদের নির্বাচন হতে দেওয়া হচ্ছে না ৷"
অন্যদিকে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "সিবিআইকে স্বচ্ছ এবং দ্রুত তদন্ত করতে হবে ৷ রাজ্য সরকারের যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের এখনই পদ থেকে অপসারিত করতে হবে ৷ কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (নর্থ) সরাসরি এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ৷ প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে যুক্ত ৷ তাদের অপসারণ করে শাস্তি দিতে হবে ৷" শুধু তাই নয়, তিনি আরও বলেন, "যারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে ৷ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করার অধিকার সকলের আছে ৷ কেন ভয় পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী লাইভ স্ট্রিমিংয়ের জন্য ? তবে কী মুখ্যমন্ত্রী চোখা চোখা প্রশ্নের জন্য ভয় পাচ্ছেন ?"
এখানেই শেষ নয়, চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী আরও বলেন, "যেভাবে ক্রাইম সিনের এলাকা নষ্ট করা হয়েছে এবং তথ্য প্রমাণ নষ্ট করা হচ্ছে, তার জন্য দায়ী মেডিক্যাল অফিসার ৷ স্বাস্থ্য দফতরের মাথার উপরের লোকেদের নির্দেশেই এই কাজ করা হয়েছে ৷ প্রথম দিন থেকে প্রমাণ নষ্ট করার কাজ চলছে ৷ এটা রাষ্ট্র মদতপুষ্ট অপরাধ হয়েছে ৷ আমরা হাথসর, উন্নাও, মণিপুর সব অপরাধের বিরোধী ৷ কিন্তু এখানে যেটা হয়েছে তার সঙ্গে সরকার এবং সরকারের লোকেরা সরাসরি জড়িত ৷ মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনস্থলে গিয়ে বাংলার মানুষের উদ্দেশে বললেন অথচ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথাই বললেন না ! আর যেভাবে সরকারি হাসপাতালে ডিউটিরত অবস্থায় একজন মহিলা ডাক্তার খুন হলেন তা দেশে তো বটেই বিশ্বেও নজিরবিহীন ৷"
অন্যদিকে, জুনিয়র ডাক্তাররাও সাংবাদিক বৈঠক করেন ৷ দীপায়ন বিশ্বাস (আইপিজিএমআর কলকাতা), অনীতা বসু (আরজি কর), সুনন্দা ঘোষ (আইপিজিএমআর)-এর অভিযোগ করে বলেন, "আমাদের এক সহকর্মীকে যেভাবে নৃসংশভাবে খুন করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা করছি ৷ নৃসংশ সেই হত্যাকাণ্ড দেখে গোটা দেশ স্তম্ভিত ৷ আমাদের প্রশ্ন, কীভাবে পুলিশ প্রাথমিকভাবে বলে দিল এটা আত্মহত্যা, কেন যাবতীয় সব সিসিটিভি ফুটেজ সিবিআইকে দেওয়া হল না, কেন ডিসি নর্থ পরিবারকে টাকা অফার করল, কেন তড়িঘড়ি দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হল ? হাইলি সাসপিসাস বিষয় ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই ঘর ভাঙার কাজ করা হল স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতিতে এবং পুলিশের উপস্থিতিতে ৷ কলকাতা পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ব্যর্থ ৷ তথ্য প্রমাণ লোপাটের যাবতীয় চেষ্টা করা হয়েছে ৷"