স্যানিটাইজ়ার বোতল অমিল, উত্তর দিনাজপুরের স্কুলে বন্ধ বণ্টন প্রক্রিয়া
উত্তর দিনাজপুর জেলা শিক্ষা দপ্তর মেসেজ়ের মাধ্যমে সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী চাল আলু ডাল বণ্টন প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। কারণ হিসেবে দেখানো হয় স্যানিটাইজ়ার বোতল উপলব্ধ নয়। আজ থেকে বণ্টন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার কথা থাকলেও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে । 10 থেকে 15 জুলাইয়ের মধ্যে ফের বণ্টন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে মেসেজ়ে জানান হয়েছে।
রায়গঞ্জ,8 জুলাই: সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী চাল আলু ডাল প্যাকেট বন্দি করা আগেই হয়ে গিয়েছিল। আজ স্কুলপড়ুয়াদের অভিভাবকদের হাতে প্যাকেট তুলে দেওয়ার কথা ছিল। আচমকা গতকাল দুপুরে জেলা শিক্ষা দপ্তর মেসেজ়ের মাধ্যমে এই বণ্টন প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। কারণ হিসেবে দেখানো হয় স্যানিটাইজ়ার বোতল উপলব্ধ নয়। আজ থেকে বণ্টন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার কথা থাকলেও আপাতত তা স্থগিত রাখা হয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলার সমস্ত স্কুলে । আগামী 10 থেকে 15 জুলাইয়ের মধ্যে ফের বণ্টন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে মেসেজ়ে জানান হয়েছে। আর এই নির্দেশিকা জারি নিয়েই একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয়ের সংখ্যা 1468 টি এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের সংখ্যা 372 টি । প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মিড-ডে-মিল দেওয়া হয়ে থাকে। সমস্ত স্কুল বন্ধ তবে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের হাতে পর্যায়ক্রমে 2কেজি চাল 2 কেজি আলু এবং আড়াইশো গ্রাম ডাল দেওয়া হচ্ছে।15 জুন রাজ্য সরকারের নির্দেশে জানায় 50 মিলিগ্রাম স্যানিটাইজ়ার বোতল দিতে হবে প্রত্যেক পড়ুয়াকে। 24 জুন উত্তর দিনাজপুর জেলার শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ দেয় আগামী 8 জুলাই থেকে স্কুলে স্কুলে এই বণ্টন প্রক্রিয়াটি শুরু হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী প্রস্তুতি নেয় প্রতিটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চাল ডাল আলু কেনার টাকা BDO অফিস থেকে বণ্টন করা হয়েছিল । প্রশাসন সূত্রে খবর , স্যানিটাইজ়ার জেলা থেকেই বিদ্যালয় যাবে এমন কথাও তারা জেনে গিয়েছিল। সমস্ত সামগ্রী আলাদা আলাদা করে প্যাকেট বন্দিও করা হয়ে গিয়েছে। আজ থেকে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের স্কুলে এসে সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার কথা জানান হয়েছিল। আর এর মধ্যেই আচমকা মঙ্গলবার দুপুরে নির্দেশিকা জারি করে এই বণ্টন প্রক্রিয়াকে বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলায় চরম বিপাকে পড়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্যাকেট বন্দি সামগ্রিক যে কোনও সময় নষ্ট হয়ে যাওয়ার বা পচে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর জেরে অভিভাবকদের মধ্যেও বিক্ষোভের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আচমকা কেন জেলা প্রশাসনে এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা মহলে।
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ চৌহান বলেন ,"15 জুন রাজ্য সরকারের নির্দেশ 50 মিলিগ্রাম স্যানিটাইজ়ার বোতল দিতে হবে । তারপর এতদিন হয়ে গেল তাও স্যানিটাইজ়ার বোতল সংগ্রহ করা গেল না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। প্রত্যেক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমস্ত সামগ্রী প্যাকেট বন্দি করে দিয়েছে। গত সোমবার থেকে শিক্ষকরা সেই প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। এইভাবে প্যাকেট মধ্যে পড়ে থাকলে আলু যে কোনও সময় নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হঠাৎ এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কেন তাই নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।"
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দীপক কুমার ভক্ত বলেন,"জেলা প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে স্যানিটাইজ়ার ছাড়া কোনও ভাবেই বাকি সামগ্রী বিতরণ করা যাবেনা । তাই বণ্টন প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। 10 থেকে 15 জুলাই পর্যন্ত সামগ্রী অভিভাবকদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।"