রায়গঞ্জ, 21 জুন:ফের দলের বিরুদ্ধে গিয়ে স্ট্যান্ড নিলেন আবদুল করিম চৌধুরী ৷ এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ইসলামপুর মানেই আবদুল করিম চৌধুরী। কিন্তু বর্তমান সময়ে সেই দলনেত্রীর বিরুদ্ধেই একের পর এক বিষোদগার করলেন আবদুল করিম ৷ তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, "আজকের ইসলামপুরকে আমার শত্রুদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এটা ইসপামপুরের মানুষ মেনে নেবে না ৷"
বুধবার নিজের বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে ফের একবার তাঁর এলাকার নির্দল প্রার্থীদের পাশেই দাঁড়ালেন আবদুল করিম চৌধুরী ৷ বর্ষিয়ান তৃণমূল বিধায়কের দাবি, তাঁর সমর্থকদের প্রতি তিনি দায়বদ্ধ ছিলেন আর থাকবেনও। আর যা দলের গাইডলাইনের বাইরে বলেই জানাচ্ছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব ৷ তবে বিধায়কের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনের সময় নিরলস পরিশ্রম করে তাঁকে জয়ী করেছিলেন তাঁর সমর্থকরা। সেই সমস্ত কর্মীদের কথা মাথায় রেখেই তিনি তাঁদের হয়ে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্যদিকে, বিধায়ক করিম চৌধুরী আরও জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর কর্মী সমর্থকরা অসম্মান করবে না ৷ কিন্তু এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাও শুনবে না তার কর্মী সমর্থকরা। পাশাপাশি করিম সাহেব বলেন, "সারা পশ্চিমবঙ্গের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক কাজ করেছেন ৷ কিন্তু দলের নেতারা যা কাজ করেছে তাতে দলের বদনাম হয়েছে ৷ প্রতিটা ক্ষেত্রে শুধু দূর্নীতি, শুধু দূর্নিতীতে ভরে গিয়েছে ৷ এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও দোষ নেই ৷" তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা দূর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বলেই দাবি করেন করিম চৌধুরী ৷
অপরদিকে তিনি এও জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইমেজটা ওই সব নেতা-মন্ত্রীদের জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ ইসলামপুরের বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, "আমি 54 বছর ধরে বিধায়ক হয়ে এসেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনি আর আপনার তৃণমুল কংগ্রেসের নেতারা আমার কথা শোনেন না ৷ কারণ ডাল মে কুচ কালা হ্যায় ৷" এর পিছনে কিছু তো আছেই বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, "আমি এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমার প্রার্থীদের প্রচারে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার করব। এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমার সমর্থিত প্রার্থীরা যদি জিতে আসে তাহলে আমরাই বোর্ড গঠন করব ৷ তৃনমুল কংগ্রেস দল কেনা-বেচার রাজনীতি করে আসছে।" করিম চৌধুরীর অভিযোগ, কেউ যদি সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি থেকে জিতে আসে তাদেরকে কেনার জন্য উঠেপড়ে লেগে যাবে তৃণমূল ৷
আরও পড়ুন:রাজীবা সিনহাকে ভর্ৎসনা প্রধান বিচারপতির, কমিশনের ঘুম কি ভাঙবে ?
করিম চৌধুরীর দাবি, অর্থের বিনিময়ে পঞ্চায়েতে টিকিট নিয়েছে অনেকেই ৷ বাদ যায়নি ইসলামপুরও। ইসলামপুরে তৃণমুল কংগ্রেসের যেসব প্রার্থীরা দাঁড়িয়েছে তাদের কাছ থেকে দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইসলামপুরের বিধায়ক করিম চৌধুরী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব জানে কিন্তু এখন কিছু লোকের হাতে পরে গিয়েছে বলেই তিনি কিছু করতে পারছেন না বলে জানান তিনি। আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নির্দেশ দিত, সেই নির্দেশ সকলে মেনে নিত ৷ এখন আর তাঁর নির্দেশ কেউ মানছে না বলে অভিযোগ করেন করিম চৌধুরী ৷ ইসলামপুর ব্লকের 206 টি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনের মধ্যে সবকটি, পঞ্চায়েত সমিতির 33টি আসনের মধ্যে 27টি এবং জেলা পরিষদের তিনটি আসনের মধ্যে দুটি আসনে করিম চৌধুরীর অনুগামীরা নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।