পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

কনের মুখে ফেস শিল্ড, হাত জীবাণুমুক্ত করে বিয়ের পিঁড়িতে বর

কোরোনা পরিস্থিতিতে এই প্রথম সামাজিক দূরত্ব মেনে বিয়ে হল রায়গঞ্জে । স্যানিটাইজ়ার মেশিনের মাধ্যমে হাত জীবাণুমুক্ত হয়ে বিয়ে করতে বসল বর । ফেস শিল্ড পরে বিয়ের পিঁড়িতে কনে ।

Couple married maintaining social distance
সামাজিক দূরত্ব মেনে বিয়ে

By

Published : Jun 18, 2020, 5:48 AM IST

রায়গঞ্জ, 17 জুন : লকডাউনের মাঝেই বিয়ে । রায়গঞ্জের শিলা ভবনে বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হল মঙ্গলবার । বিয়ে করতে এসে ভবনে প্রবেশের আগে রীতিমতো হাত ধুয়ে স্যানিটাইজ়ার মেশিনের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত হয়ে তবেই প্রবেশের অনুমতি মিলল বরের । অন্যদিকে, মেকআপ উঠে যাওয়ার ভয় সরিয়ে ফেস শিল্ড পরে বিয়ে করতে বসল কনে । কোরোনা পরিস্থিতিতে এই প্রথম সামাজিক দূরত্ব মেনে বিয়ে হল রায়গঞ্জে ।

কয়েক মাস আগেই রায়গঞ্জের বীরনগরের বাসিন্দা ত্রিজা দাসের সঙ্গে রায়গঞ্জেরই উদয়পুরের বাসিন্দা দেবব্রত দেবনাথের বিয়ে ঠিক হয় । প্রায় 500 থেকে 600 নিমন্ত্রিতের আসার কথা ছিল বিয়েতে । 16 জুন ছিল বিয়ের দিন ।

সব ঠিকঠাক থাকলেও বাধ সাধে কোরানা ভাইরাস । বিয়ের অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিল দুই পক্ষ । তবে বাড়ির গুরুজনরা এই বিয়ের অনুষ্ঠান পিছাতে চাননি । সরকারি নিয়ম মেনে পাত্রপক্ষের 10 জন এবং পাত্রীপক্ষের 15 জন নিয়ে মোট 25 জনের উপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় মঙ্গলবার রাতে । আয়োজনে কোনও খামতি ছিল না । তবে আগে থেকে ঠিক করা নিমন্ত্রিতরা অনুষ্ঠানে আসতে না পারায় মন একটু খারাপ ছিল বর-কনের ।

বিয়ের অনুষ্ঠান ঠিক হওয়ার পর ক্যাটারিংয়ের দায়িত্ব যারা নিয়েছিলেন, ভেবেছিলেন লাভের মুখ দেখবেন । কিন্তু, লকডাউনের জেরে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা অত্যন্ত কমে যাওয়ায় তা আর হল না । বিয়ের মণ্ডপের চারিদিকে ছিল সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বার্তা । বরযাত্রীদের হাতে মিষ্টির প্যাকেটের সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল স্যানিটাইজ়ার । বিয়েবাড়িতে আসা সকলকে বারবার হাত ধোয়ার পাশাপাশি বাধ্যতামূলকভাবে স্যানিটাইজ়ার মেশিনের দ্বারা জীবাণুমুক্ত করা হয় । স্যানিটাইজ়ারের মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছিল গোটা এলাকাকেই । খাবার জায়গাতেও এক টেবিলে দু'জনের বেশি বসা বাধ্যতামূলক করা হয় । সব মিলিয়ে একেবারে অন্যরকম বিয়ের সাক্ষী থাকল রায়গঞ্জের বাসিন্দারা ।

বর দেবব্রত দেবনাথ বলেন, "যখন বিয়ে ঠিক হয়েছিল তখন ভাবিনি এইভাবে বিয়ে করতে হবে । তবে বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে তার উপর নজর রেখে বাধ্যতামূলকভাবে এইভাবে আমাদের বিয়ে করতে হচ্ছে । একটু আলাদা অভিজ্ঞতা । তবে সব আত্মীয়-স্বজনদের ডাকতে না পেরে খারাপ লাগছে ।" কনের মা শর্মিষ্ঠা দাস বলেন, "আমরা কখনওই ভাবতে পারিনি নিকট আত্মীয়দের ছাড়া এইভাবে মেয়ের বিয়ে দিতে হবে । ভাবিনি এত কম সংখ্যক লোকের মধ্যেই বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে । কিন্তু কিছু করার নেই । শুধুমাত্র আগে থেকে ঠিক হয়ে যাওয়ার কারণেই এইভাবে আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হল ।"

ক্যাটারার সংস্থার তরফে গণেশ দাস বলেন, "যখন বিয়ের অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন এখানে 400 থেকে 500 লোক আসার কথা ছিল । তবে এখন মাত্র 25 জনকে খাওয়ানো হল তাও সামাজিক দূরত্ব মেনে । এক টেবিলে দু'জনের বেশি খাওয়ানো যাবে না । সরকারি নির্দেশিকা পালন করেই এই কাজ করছি তা ঠিকই । কিন্তু যেখানে বাসে সব সিটেই যাত্রীরা যাতায়াত করছেন । সেখানে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে এত কম সংখ্যক মানুষকে আসার অনুমতি দিলে ক্যাটারার বা এই ধরনের ব্যবসায় ক্ষতি হয় । কিছু সরকারি সাহায্য পেলে আমাদের উপকার হয় ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details