কলকাতা/উত্তর 24 পরগনা, 5 ফেব্রুয়ারি: নদীর সঙ্গে বসবাস বারোমাসের চিন্তা ৷ বিদ্যাধরী নদীর তিরে মাছের ভেড়ির পাশে গড়ে ওঠা একটি সুন্দরবন এলাকার এক প্রত্যন্ত জনপদ সন্দেশখালির কানমারী গ্রাম ৷ বন্যার সময় মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজতে হয় ভিটে-মাটি ছেড়ে ৷ দু’বেলা পেট ভরানোটাই যেখানে দায়, সেখানে 'পুষ্টিকর খাদ্য' শব্দটি হয়তো তাঁদের অভিধানেই নেই ৷ সরকারি পরিকাঠামো নেই বললেও হয়তো কম বলা হবে ৷ ঠিক এমন এক জায়গায় ফুটবল খেলার কথা লোকে ভাবতেও পারে না ৷ তাও কি না মেয়েরা (Story of Rising Women Footballers from Sandeshkhali) !
হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও, এটাই সত্যি ৷ এক-আধজন নয়, এলাকার বহু মেয়ে হাজারও প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে হাসিমুখে আঁকড়ে ধরেছে ফুটবলকে ৷ সোনালি মাহাতো, অর্পণা সর্দার, সুমনা সর্দার, প্রতিমা মাহাতো, বৃহস্পতি সর্দার, পূজা মাহালী, সীমা সর্দাররা গত তিন বছর ধরে ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে জীবনের স্রোতে ভাসতে চাইছে ৷ ঝুমুর ও লোকনৃত্যে পারদর্শী ওরা এবার ফুটবল মাঠে ৷ তাদের জন্য গড়ে উঠেছে একটি অ্যাকাডেমিও ৷ যার সঙ্গে নাম জুড়েছে মোহনবাগান ক্লাবের ৷
যে নাচে সে ফুটবল খেলে এবং পড়াশোনাও করেও ৷ অপর্ণা, সীমা, সুমনারা কেউ স্নাতক, কেউ বা উচ্চমাধ্যমিক দেবে ৷ উত্তর 24 পরগনার প্রত্যন্ত গ্রামে মোহনবাগান নামটিকে আঁকড়ে ধরেছিলেন এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠরা ৷ যা বয়ে নিয়ে চলেছে নতুন প্রজন্ম ৷ কানমারী সোশাল কেয়ার ফুটবল অ্যাকাডেমির তত্ত্বাবধানে নিয়মিত প্রায় 60-70 জন মেয়ে এখানে ফুটবল চর্চা করে ৷ দু-তিনজন এই অ্যাকাডেমি থেকে তো এবার সদ্য সমাপ্ত কন্যাশ্রী কাপে খেলারও সুযোগ পেয়েছিল ৷ তবে, এবার ফুটবল বৃত্তের পরিধিটা বাড়ানোর পালা ৷
কানমারী মোহনবাগান ক্লাবের (Kanmari Mohun Bagan Club) এই প্রচেষ্টাকে সফল করতে আগেই আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন । এবার তা আরও দৃঢ়ভাবে তা বাড়ানোর উদ্যোগ ৷ জার্সি, ফুটবল-সহ যাবতীয় প্রয়োজনী ক্রীড়া সামগ্রী প্রদানের পৃষ্ঠপোষকতা করে চলেছেন কানমারী মোহনবাগান ক্লাবের শীর্ষ কর্মকর্তা প্রবীর রায়চৌধুরী ৷ যিনি তাঁর সংস্থার মাধ্যমে গ্রামেগঞ্জে ফুটবলের বিকাশে এবং প্রতিভাবান ফুটবলারদের তুলে আনার কাজ করেন ৷