পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Dhanyakuria Gaine Garden: হেরিটেজ তকমার পরও অবহেলায় ঐতিহ‍্যবাহী 'ধান‍্যকুড়িয়া গাইন গার্ডেন' - হেরিটেজ তকমার পরও অবহেলায় ধান‍্যকুড়িয়া গার্ডেন

মিলেছে 'হেরিটেজ' তকমা! এক বছর পরও সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। অবহেলায় পড়ে থেকে আজ ধ্বংস হওয়ার মুখে ঐতিহ‍্যবাহী ধান‍্যকুড়িয়া গাইন গার্ডেন। ক্ষুদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।

Etv Bharat
Etv Bharat

By

Published : May 13, 2023, 9:32 PM IST

অবহেলায় ঐতিহ‍্যবাহী 'ধান‍্যকুড়িয়া গাইন গার্ডেন'

বসিরহাট, 13 মে: 'হেরিটেজ'-তকমার এক বছর পরও অবহেলায় পড়ে রয়েছে ঐতিহ‍্যবাহী ধান‍্যকুড়িয়া গাইন গার্ডেন। সংস্কারের অভাবে বর্তমানে সেটি ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। গার্ডেনের চারপাশ ভরেছে ঘাস এবং আগাছায়। সীমানা পাঁচিলও যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। অথচ তারপরও রক্ষণাবেক্ষণের কোনও উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। কার্যত অযত্নে পড়ে থেকে থেকে বিশাল এই স্থাপত্য আজ নষ্ট হওয়ার মুখে। প্রশাসনের উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত এই ঐতিহাসিক ভবন সংস্কার করা হোক, চাইছেন তাঁরা।

প্রায় দেড়শো বছর আগে বসিরহাট-বেড়াচাঁপার টাকি রোডের ধারে 'গাইন' দুর্গের আদলে বিশাল এই স্থাপত্য গড়ে তোলেন ধান‍্যকুড়িয়ার পাট ব‍্যবসায়ী মহেন্দ্রনাথ গাইন। পরবর্তীকালে যা গাইন গার্ডেন নামে পরিচিতি পায়। 33 বিঘা জমির ওপর সুদৃশ্য অট্টালিকা ছাড়াও আমোদ প্রমোদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল একটি বাগানবাড়িও। সেখানে জমিদার এবং তাঁদের ব‍্যবসায়িক সহযোগী ইংরেজদের বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল। সেসময় টাকি রোড বরাবর মার্টিন রেল চলত। যার স্টেশন ছিল ধান্যকুড়িয়ায়। ওই রেলে করে ইংরেজরা আসতেন গাইন গার্ডেনে। এখন সেসব অতীত। তবে, সেই সমস্ত ইতিহাসের চিহ্ন এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গাইন গার্ডেনের আনাচে কানাচে।

যেগুলোর অধিকাংশই আজ ধ্বংস হতে বসেছে কেবলমাত্র সংস্কারের অভাবে। আগে গার্ডেনের ভিতর অট্টালিকার পুকুর ঘাটে দু'টি বড় মার্বেলের সিংহ ছিল। নব্বইয়ের দশকে গাইন পরিবারের কয়েকজন সেই সিংহ দু'টি বিক্রি করে দেন। তবে বাগানবাড়ির গেটে দু'জন ইংরেজ একটি সিংহকে বধ করছে-এরকম একটি ভাস্কর্য এখনও রয়েছে। তিরিশের দশকে এখানে 'কপালকুণ্ডলা' সিনেমার শ্যুটিংও হয়েছিল। ফলে, ইতিহাসের পালা বদলের সঙ্গে সঙ্গে এর জৌলুস কমতে শুরু করে। তবে ইন্দো-ইউরোপীয় মিশ্র আঙ্গিকের সুদৃশ্য এই অট্টালিকা এখনও অবাক করে এলাকার লোকজনকে । 2022 সালে হেরিটেজ হিসাবে স্বীকৃতি মেলে এই জায়গা। চলতি বছরের 18 এপ্রিল বিশ্ব ঐতিহ্য দিবসে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশনের ব্রশিওরে ধান্যকুড়িয়া গাইন গার্ডেনের ছবি দিয়ে এই স্থাপত্যকে সম্মান জানানো হয়।

আরও পড়ুন:'প্রতীচী বির্তকে'র মাঝেই মুকুটে নতুন পালক! ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাচ্ছে বিশ্বভারতী

যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, খাতায়-কলমে শুধু 'হেরিটেজ' তকমাটুকুই মিলেছে। বাস্তবে ভবনের চিত্র বদলায়নি। বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। বাড়ছে বিপদের আশঙ্কা । সীমানা প্রাচীর ভেঙে বর্তমানে ভবনটি দুষ্কৃতীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। হেরিটেজ ভবনকে ঘিরে পর্যটনের কথাও ভাবা হয়েছিল। তবে, তেমন কিছুই হয়নি। আরও অভিযোগ, গাইন গার্ডেনের গা ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে একটি কর্মতীর্থ ভবন। ফলে, হেরিটেজ চত্বরে কর্মতীর্থ গড়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ।

অন্যদিকে, এনিয়ে উদাসীনতার অভিযোগ মানতে চাননি জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ। তিনি বলেন, "জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই সেখানে সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে যাবে। এনিয়ে কারও মধ্যে কোনও অবকাশ নেই।উন্নয়নের বিষয়ে আমরা বদ্ধপরিকর ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details