তৃণমূলের খেলা হবে দিবস অনুষ্ঠানের মঞ্চে বক্তৃতা দিচ্ছেন খড়দা থানার আইসি রাজকুমার আইসি খড়দা, 18 অগস্ট: নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করলেন খড়দা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রাজকুমার সরকার ৷ উর্দি পরে 'খেলা হবে' দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ওই পুলিশ আধিকারিক ৷ সেই মঞ্চ থেকে রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন 'তোলাবাজি করবেন না।' ৷ সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীও ৷ গোটা বিষয়টি নিয়েই প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
এ নিয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ৷ তিনি বলেন, "এই বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট জানা নেই ৷ ঘটনাটি খোঁজ নিয়ে জানতে হবে ৷" 16 অগস্ট তৃণমূলের 'খেলা হবে' দিবস ছিল ৷ রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দিনটি উদযাপন করে দলের নেতা থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থকরা ৷
খড়দা থানার আইসি তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আপনারা নায়কোচিত অভিভাবক পেয়েছেন ৷ এরকম সবাই পান না ৷" তিনি আরও বলেন, "আপনারা কাউন্সিলর ৷ আপনারা যেমন কাজ করবেন, বিধায়কের ইমেজ তেমনটাই হবে ৷ তিনি (বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী) তো সবসময় সব জায়গায় থাকতে পারবেন না ৷ তাঁর সম্মানটা রাখবেন ৷"
পুজোর সময় এগিয়ে আসছে ৷ তাই পুলিশ আধিকারিক রাজকুমার সরকারের নিদান, "আপনারা সামাজিক কাজ করুন ৷ সামনে পুজো আসছে ৷ আমরা সবাই সরকারের মুখ ৷ মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মানুষের জন্য কাজ করতে হবে ৷ দরকার হলে পাড়ায় গিয়ে কাজ করুন ৷ অসামাজিক কাজ করবেন না ৷"
এরপরই হুঁশিয়ারির সুরে এই পুলিশ আধিকারিক বলতে থাকেন, "তোলাবাজি করবেন না ৷ একে যেন কোনওভাবেই প্রশ্রয় না দেওয়া হয় ৷" তিনি নিজের পদ সম্পর্কে উপস্থিত জনতাকে সচেতন করে বলেন, "আপনাদের নিরাপত্তা যদি আমি না-দিতে পারি ওই জায়গাটায় আমার থাকার কোনও যোগ্যতা নেই। সোজাসুজি বিধায়ককে জানাবেন ৷"
আরও পড়ুন: হাড়োয়ায় তৃণমূল নেতা খুনে ধৃত সুপারি কিলার, জেলে বসেই খুনের ব্লু-প্রিন্ট ? তদন্তে পুলিশ
তোলাবাজি সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে বিজেপির স্থানীয় নেতা কিশোর কর বলেন, "তৃণমূল দলটাকে এখন পুলিশ কন্ট্রোল করছে ৷ দল এখন সরাসরি তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণে নেই ৷ তাই পুলিশকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করাতে হচ্ছে ৷" এই বিষয়ে ইটিভি ভারতের তরফে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "সারা রাজ্যজুড়ে যে চুরি থেকে শুরু করে মহিলাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে তার এটাই সবথেকে বড় প্রমাণ। পুলিশের কিছু করার নেই। তাই পুলিশ আধিকারিককে মঞ্চ থেকে এই ধরনের আবেদন করতে হচ্ছে যাতে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত যায়। এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট পুলিশ আর তৃণমূল মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। "