গাইঘাটা, 21 নভেম্বর: সিএএ ইস্যুতে আগামী 26 তারিখে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে জনসভা করতে চলেছে বিজেপি । ওইদিন দুপুর একটায় ঠাকুরনগর ফুটবল খেলার মাঠে সভা হওয়ার কথা রয়েছে । সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক (Nisith Pramanik) । বিজেপির পক্ষ থেকে এই সভা করা হচ্ছে বলে জানান বনগাঁ লোকসভার সাংসদ তথা কেন্দ্র প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) । তবে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি রামপদ দাসের বক্তব্য বিজেপির পক্ষ থেকে এমন সভা হবে বলে তাঁর জানা নেই । আর এখানেই গোষ্ঠীদ্বন্দ দেখছে শাসক দল তৃণমূল (BJP Inner Clash at Gaighata) ।
কিছুদিন আগে শান্তনু ঠাকুরের গড় ঠাকুরনগরে কর্মী সম্মেলন করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । সেই সভায় দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর ও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডলকে । সভায় শান্তনু ঠাকুর না থাকা প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, "সাংগঠনিক জেলায় কিছুটা অসুবিধা রয়েছে । শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে কথা হয়েছে । দ্রুত তা মিটে যাবে ।" তবে সুকান্ত মজুমদারের সভার 15 দিনের মাথায় মূলত শান্তনু ঠাকুরের ডাকে ফের ঠাকুরনগরে শুভেন্দু অধিকারীর সভাকে কেন্দ্র করে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে ।
আরও পড়ুন:অভিযোগ স্পষ্ট নয়, শিশু সুরক্ষা কমিশনের শোকজে জবাব শুভেন্দুর
সভা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শান্তনু ঠাকুর জানান, বিজেপির পক্ষ থেকে আগামী 26 তারিখে সভার আয়োজন করা হয়েছে । সভার বিষয়বস্তু সিএএ । সিএএ নিয়ে শাসকদলের বিরোধী অবস্থান নিয়ে দ্বিধা বিভক্ত মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ । মূলত সেই বিষয় নিয়ে সভায় বক্তব্য রাখা সম্ভবনা রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর । 26 তারিখের সভা নিয়ে ইতিমধ্যে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বৈঠকও সেরেছেন কেন্দ্র প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ।
তবে সভা প্রসঙ্গে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি রামপদ দাসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, 26 তারিখে যে সভা হবে সেই সভা মূলত মতুয়াদের পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে । সেই সভা থেকে সিএএ বার্তা দেওয়া হবে । পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দেন, বিজেপির পক্ষ থেকে সভা করা হচ্ছে বলে তা জানা নেই । সভা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি । স্বভাবত কারণেই প্রশ্ন উঠছে যদি দলীয় কর্মসূচি হয়ে থাকে তাহলে জেলা সভাপতি জানবেন না তা কী করে সম্ভব ! আর এখানেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ।
আরও পড়ুন:'তৃণমূল নেতারা বাড়িতে অস্ত্র মজুত করে রাখছেন', তোপ বিকাশের
বনগাঁ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, "কিছুদিন আগে ঠাকুরনগরে সভা করতে এসেছিলেন সুকান্ত মজুমদার । সেখানে ওখানকার সাংসদ বিধায়কদের দেখা যায়নি । তারই পালটা সভা করতে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে আসছেন ওখানকার সাংসদ ।" তাঁর দাবি, বিজেপি দলটা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত । এই দলটার মধ্যে এখন আর কিছুই নেই ৷
প্রসঙ্গত, বিগত দিনে জেলা সভাপতি ডাকা কর্মসূচিতে দেখা যায়নি বনগাঁ লোকসভার সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, তাঁর দাদা গাইঘাটা বিধানসভার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর এবং শান্তনু ঠাকুরের অনুগামী বলে পরিচিত বনগাঁ সংগঠনিক জেলা বিজেপি সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডলকে । অন্যদিকে আবার, শান্তনু ঠাকুরের ডাকা কোনও মিটিং-মিছিলে জেলা সভাপতি এবং জেলা সভাপতি অনুগামীদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি । বিজেপির একাংশের মতে শান্তনু ঠাকুর এবং জেলা সভাপতি রামপদ দাসের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের ৷