বারাসত, 10 এপ্রিল:নিয়োগ দুর্নীতি, গরু ও কয়লা পাচারকাণ্ডে সরগরম বাংলার রাজনীতি। ঠিক তখনই বারাসত পৌরসভার গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগেও উঠল চরম অনিয়মের অভিযোগ। অভিযোগ, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এক চাকরি প্রার্থীকে বঞ্চিত করে সেই জায়গায় বাঁকা পথে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর নিরাপত্তারক্ষীর মেয়েকে। বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীর এই অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসতে।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কার্যত তোলপাড় রাজ্য ৷ এই ইস্যুতে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক ধরপাকড়ও চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷ গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়ক-সহ একাধিক আমলাও ৷ এরপর তদন্ত যত এগিয়েছে, একাধিক দুর্নীতির বিষয়গুলি সামনে এসেছে ৷ সম্প্রতি, তদন্তের স্বার্থে তল্লাশি চালাতে গিয়ে রাজ্য়ের পৌরসভাগুলিতে বেনিয়ম হয়েছে বলেও দাবি করে ইডি ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ ছিল, রাজ্য়ের একাধিক পৌরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে ৷ এবার তাতেই নয়া অভিযোগ সামনে এসেছে ৷ এবার যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রাজ্য়ের শাসকদলের বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষীর মেয়ের বিরুদ্ধে ৷
পাশাপাশি, এক্ষেত্রে আবার প্রভাব খাটানোর অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি বিক্রির নামে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীর পরিবারকে। স্বভাবতই গোটা ঘটনায় একদিকে যেমন বিধায়কের ভূমিকা আতস কাঁচের নীচে, তেমনই তৎকালীন পৌরসভার চেয়ারম্যান, বর্তমান তৃণমূলের কাউন্সিলর সুনীল মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে । কারণ, তৎকালীন পৌরসভার চেয়ারম্যান সবকিছু জেনেও বেআইনি এই নিয়োগে ইন্ধন দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওটা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং শাসকদলের বিধায়ক দু'জনেই।
অন্যদিকে, এই অভিযোগের পিছনে বিরোধীদের চক্রান্ত দেখছেন পৌরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান। আর হাতে গরম অস্ত্র পেয়ে তৃণমূলকে রীতিমতো নিশানা করেছে বিরোধী শিবির। সূত্রের খবর, 2014-15 সালে গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় বারাসত পৌরসভার তরফে। নিয়ম মেনে তাতে আবেদন করেছিলেন বারাসতের উত্তর কাজিপাড়ার বাসিন্দা কাজী আজিজ হোসেন হায়দার। পৌরসভা সূত্রে খবর, এই চাকরির জন্য 700-র বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল সেই সময়। 2014 সালের 21 সেপ্টেম্বর পরীক্ষার দিনক্ষণও ধার্য করা হয়েছিল। লিখিত পরীক্ষার পর ইন্টারভিউও হয়। লিখিত পরীক্ষার পর ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন কাজী আজিজ হোসেন হায়দার ৷ তাঁর দাবি, যোগ্যতা থাকা সত্বেও শেষ পর্যন্ত ওই প্রার্থীর কপালে জোটেনি পৌরসভার স্থায়ী কর্মী পদের চাকরি। অভিযোগ, তাঁর পরিবর্তে চাকরি পেয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর নিরপত্তারক্ষীর মেয়ে পায়েল ইন্দু (মণ্ডল)।