মহিষাদল, 8 ফেব্রুয়ারি : 2013 সালের ভয়াবহতার আতঙ্ক ফিরেছে আট বছর পর । প্রকৃতির তান্ডবলীলায় হিমবাহ ধসে ভাসল উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলা বিস্তীর্ণ এলাকা । সংবাদমাধ্যমে যখন একের পর এক মৃত্যুর খবর সামনে আসছে, যখন ধস নামার সেই ভিডিয়ো বারবার দেখানো হচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলিতে, তখন মহিষাদলে থেকে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করার । কিন্তু না, প্রতিবারই ওপার থেকে শোনা যাচ্ছে মোবাইল সুইচড অফ ।
রবিবারের এই দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের যুবক সুদীপ গুড়িয়া । বয়স বছর সাতাশের আশেপাশে । উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় কর্মরত তিনি । থাকতেন চামোলির তপোবন এলাকায় । দুর্ঘটনার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ হয়নি সুদীপের । সুদীপের খোঁজে উদ্বিগ্ন পরিবার পরিজনেরা ।
দুর্ঘটনার পর থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না লালু জানা ও বুলু জানারও । তাঁরাও চামোলি জেলায় কর্মরত ছিল । সুদীপের বাড়ি মহিষাদলের চক- দ্বারিবেড়িয়া গ্রামে এবং লালু ও বুলুর বাড়ি লক্ষ্যা গ্রামে ।
গত বছরের মার্চ মাসে উত্তরাখণ্ডের ঋষি গঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজে যান মহিষাদলের চক-দ্বারিবেরিয়া গ্রামের সুদীপ গুড়িয়া । এক বছরের মধ্যে আবার বাড়ি ফিরবেন বলে কথা দিয়ে গিয়েছিলেন । উত্তরাখণ্ডে কাজে যাওয়ার পর প্রায় নিয়মিত ফোনে কথা হত চক- দ্বারিবেরিয়া গ্রামে থাকা বৃদ্ধ পিতা বৈদ্যনাথ গুড়িয়া ও বেহুলা গুড়িয়ার সঙ্গে । প্রায়ই বড় দাদা প্রদীপ গুড়িয়াকে ফোন করে ভাইপোর খোঁজ নিতেন সুদীপ।
আরও পড়ুন : উত্তরাখণ্ডে ধসে মৃত বেড়ে 14, এখনও নিখোঁজ 170
শনিবার রাতে পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয় সুদীপের । বাড়ির সদস্যদের ফোনে সুদীপ জানিয়েছিলেন, তিনি ভালো আছেন । বৌদির কাছে জানতে চেয়েছিলেন আলু ভাজা কীভাবে সুস্বাদু করা যায় । এটাই ছিল সুদীপের সঙ্গে পরিবারের শেষ কথা । এরপর থেকে আর তাঁর যোগাযোগ করতে পারেননি পরিজনরা ।