কালনা , 19 মে : দেশজুড়ে চলছে লকডাউন । ফেরি পারাপার বন্ধ । অগত্যা ভাগীরথী নদীতে সাঁতার কেটেই প্রত্যেকদিন কাজে যাচ্ছেন কালনার এক যুবক । শুধুমাত্র পেটের টানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে নদী পারাপার ।
পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার জাপট পাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় পাল । নদিয়ার শান্তিপুরে নৃসিংহপুর এলাকায় তাঁর একটা ছোটো সোনার দোকান আছে । বাড়িতে আছেন বৃদ্ধ বাবা-মা , ভাই এবং স্ত্রী । লকডাউনের জেরে দোকান বন্ধ থাকায় তাঁদের পরিবারে আর্থিক অনটন শুরু হয় । তৃতীয় দফার লকডাউনে সোনার দোকান খোলার পর খেয়া-পারাপার বন্ধ থাকার জন্য তিনি দোকানে যেতে পারছিলেন না । অগত্যা পেটের টানে চার- পাঁচ দিন নদী পারাপার করেই দোকানে যাবেন বলে মনস্থির করেন সঞ্জয় । নদী পারাপারের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও পরিবারের কথা ভেবে নদী পার করার সিদ্ধান্ত নেন সঞ্জয় । একটা টিউবের সাহায্যে সাঁতার কেটে নদী পারাপার শুরু করেন । ওই টিউবের মধ্যে একখানা নাইলন ব্যাগের মধ্যে জামা প্যান্ট দোকানের চাবি সহ অন্যান্য জিনিস ভরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁতার কাটতে হয় তাঁকে । টিউবের সাহায্যে সাঁতার কেটেই তাঁকে পৌঁছাতে হয় শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাটে । এভাবেই সকালে দোকানে গিয়ে বিকেলে বাড়ি ফেরেন ওই যুবক ।
বন্ধ খেয়া পারাপার, সাঁতার কেটেই ভাগীরথী পেরিয়ে দোকানে যুবক - Bhagirathi river
লকডাউনের ফলে বন্ধ ফেরিঘাট ৷ কিন্তু অন্যদিকে তৃতীয় লকডাউনে সোনার দোকান খোলার অনুমতি পাওয়ায় পেটের টানেই রোজ ভাগীরথী নদী পেরিয়ে নদিয়ায় দোকান খুলতে যাচ্ছেন কালনার এক যুবক ৷
সঞ্জয় পাল বলেন , ‘‘বড় সংসার । লকডাউনের জেরে দোকান বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়তে হয় । এদিকে বন্ধ খেয়া পারাপার । তাই দোকানে পৌঁছানোর কোনও উপায় না থাকায় সংসারের হাল ধরতে সাঁতার কেটেই যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছি । ’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ‘‘এইভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করা উচিৎ নয় । বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে । প্রয়োজন হলে ওই যুবককে রেশনের দ্রব্য সামগ্রী দেওয়া হবে । তবে নদিয়ার শান্তিপুরের নৃসিংহপুর রেড জ়োন হিসেবে চিহ্নিত আছে । তাই ফেরি পরিষেবা বন্ধ হয়েছে । পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি ।’’