কলকাতা, 9 জানুয়ারি: মোদি সরকার কৃষকদের উপকার করার জন্য ঠিক কী কী করেছে, শনিবার পূর্ব বর্ধমানের মাটিতে দাঁড়িয়ে বারবার সেই কথাই তুলে ধরার চেষ্টা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। বর্ধমানের পরিচয় পশ্চিমবঙ্গের শস্যগোলা হিসেবে। স্বাভাবিক ভাবেই তাই সেখানে দাঁড়িয়ে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।
অথচ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের অভিযোগের শেষ নেই। নাড্ডা যখন বর্ধমানে দাঁড়িয়ে এই কথা বলছেন, তখন দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলন প্রায় দেড় মাসের কাছাকাছি হয়ে গেল। মোদি সরকারের নতুন তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছেন কৃষকরা। একাধিক কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেও কেন্দ্রীয় সরকার সমাধান সূত্র বের করতে পারেনি। আইন বাতিলের দাবিতে এখনও অনড় কৃষকরা।
যদিও এই আইন কৃষকদের পক্ষেই। এই আইনে শেষপর্যন্ত কৃষকদেরই লাভ হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার এই কথা বুঝিয়েছেন। এদিন কাটোয়ার জনসভায় কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইনের পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে নাড্ডাকে। একই সঙ্গে কিষাণ সম্মাননিধির প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। ওই প্রকল্প যে কৃষকদের উপকার করছে, সেই কথাও জানাতে ভোলেননি তিনি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, জেপি নাড্ডা বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা। ফলে তিনি কৃষকদের নিয়ে কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিলে সেই বার্তা গোটা দেশে যায়। তাতে বিজেপির পক্ষে সারা দেশের কৃষকদের বোঝানো সম্ভব হয় যে তারা আসলে 'কৃষক-বন্ধু'। তাছাড়া নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সামগ্রিক আন্দোলনও চলছে দিল্লিতে। বাকি দেশে দু-একটি মিছিল ছাড়া সেভাবে কোনও লাগাতার প্রতিবাদ হয়নি। নাড্ডা সেই সুযোগ নিয়েই বাংলার শস্যগোলায় দাঁড়িয়ে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
যদিও বিজেপির এই কৌশলকে দ্বিচারিতা হিসেবেই দেখছে রাজ্যের বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে বিজেপি। দিল্লির কৃষক আন্দোলন সরকারের গদি টলিয়ে দেবে। সেদিন বুঝবে বাংলায় এক কথা, আর দিল্লিতে অন্য চেহারা বুঝিয়ে দেবে সেদিন বাংলার মানুষ।
আরও পড়ুন:চোরেদের বাঁচাতে আদালতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, কটাক্ষ নাড্ডার
অন্যদিকে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদির মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পূর্ব পরিকল্পনা করে কৃষকদের বঞ্চিত করার জন্য 2014 সালে এমন একটি কৃষি বিরোধী আইন এই রাজ্যে লাগু করেছে। নরেন্দ্র মোদিকে ঘিরে ফেলেছে দেশের কৃষকরা। বাংলা থেকে বেরনোর জন্য জেপি নাড্ডা পিঠ বাঁচানোর বক্তব্য রাখলেন।