মেদিনীপুর, 12 নভেম্বর: একসময় মেদিনীপুরকে বিপ্লবীদের শহর বলা হত ৷ জঙ্গলমহল অধ্যুষিত এই মেদিনীপুরের ঐতিহ্য বর্তমানে ব্যাহত হচ্ছে বহুতল নির্মাণের (High-Rise Construction) ফলে ৷ এমনই অভিযোগ মেদিনীপুর শহরের একাংশ বাসিন্দাদের (History of Midnapore is Under Threat) ৷ সেইসঙ্গে একের পর এক বহুতলগুলিতে মাটির তলা থেকে বোরিং করে যথেচ্ছভাবে জল তোলা হচ্ছে ৷ এতে খুব দ্রুত পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু জায়গায় জলস্তর নেমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷
ভারতের স্বাধীনতার লড়াইয়ে বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেক বড় অবদান রয়েছে ৷ শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্থান এই মেদিনীপুর ৷ বিমল দাশগুপ্ত, অনাথ বন্ধু পাঁজা, মৃগেন দত্ত, ব্রজ কিশোর রায়, প্রফুল্ল ভটচার্য-সহ একাধিক বিপ্লবীর বাড়ি রয়েছে এই মেদিনীপুরেই ৷ সেই ভগ্ন প্রায় বাড়িগুলি আজও পাহারা দিচ্ছেন তাঁদের বর্তমান প্রজন্ম ৷ কিন্তু মেদিনীপুর শহর ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে যেভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো বহুতল গজিয়ে উঠছে ৷ তাতে মেদিনীপুরের সেই সব পুরনো ইতিহাস একে একে মুছতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন এখানকার একাংশ বাসিন্দা ৷ বহু পুরনো বাড়ি ধূলিসাৎ করে বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে ৷
আর এই বহুতল নির্মাণে কিছু অসাধু প্রোমোটার মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ অনেকেই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন ৷ তাঁরা বর্তমান শাসকদল ও মেদিনীপুর পৌরসভাকে দায়ী করেছেন ৷ যদিও, পরিচর্যার অভাব ও আর্থিক সামর্থ না থাকায় স্বেচ্ছায় পুরনো বাড়ি বহুতল নির্মাণের জন্য প্রোমোটারদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন ৷
এ নিয়ে মেদিনীপুরের শহরের শিক্ষক দেবাশিস আইচ অভিযোগ করেছেন, ‘‘বহুতল নির্মাণ নেশার মতো হয়ে গেছে মেদিনীপুরে ৷ প্রতিদিন নতুন নতুন বহুতল গড়ে উঠছে শহরের বুকে এবং এই বহুতল কোনটা 7 তলা তো কোনটা 12 তলা ৷ আবার কোথাও 15 তলা ৷ যা ভয় ধরিয়েছে শহরবাসীর মধ্যে ৷ এই বহুতল নির্মাণের ফলে যেমন একদিকে মেদিনীপুরের ঐতিহ্য হারাচ্ছে ৷ তেমনি ঐতিহাসিকতা সব স্মৃতিকে নষ্ট করছে ৷