মেদিনীপুর, 23 নভেম্বর:একটা সময় ছিল যখন মাসের একটি বেলা বা সন্ধে বা রাত বরাদ্দ থাকত সিনেমা হলে যাওয়ার জন্য ৷ পছন্দের বিষয় বা পছন্দের নায়ক-নায়িকার ছবি মুক্তি পেলেই আর ঘরে মন টিকত না ৷ রাস্তার ধারে পছন্দের নায়কের বড় বড় পোস্টার দেখলে মনে হতো এখুনি চলে যাই সিনেমা হলে ৷ বিশেষ করে স্কুল-কলেজে পড়াকালীন সিনেমা হলের প্রতি টান ছিল আলাদাই ৷ তবে এখনকার জেনারেশন অবশ্য ঘরে বসে সবটা পেতেই পছন্দ করে ৷ তাই পরিবাররে সবাইকে নিয়ে বা বন্ধুদের সঙ্গে হৈহৈ করে সিনেমা দেখা তাদের না পসন্দ ৷
মুক্তি পাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই নতুন সিনেমা চলে আসছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ৷ অ্যানড্রয়েড ফোন আর তাতে নেট রিচার্জ থাকলেই হল ৷ ঘরে শুয়ে হোক বা অফিস যাওয়ার পথে বাসে-ট্রেনে, যখন ইচ্ছে তখনই নতুন নতুন বিভিন্ন রকমের সিনেমা হাজির হয়ে যাচ্ছে চোখের সামনে ৷ পছন্দ মতো সিনেমা দেখার জন্য আর হলে যাওয়ার প্রয়োজন নেই ৷
মেদিনীপুর শহরে(Medinipur Town)অবস্থিত হরি সিনেমা হলের পথচলা শুরু হয় 1947 সালে ৷ নতুন সিনেমা এলেই দৌড়ে যেত আট থেকে আশি । কেউ লুকিয়ে বা কেউ পরিবারের সঙ্গে । সত্তর আশি তো বটেই বিংশ শতাব্দীতেও উপচে পড়ত ভিড় । এক একটা সিনেমা চলত প্রায় দু'মাস, কোনওটা আবার আড়াই থেকে তিন মাস ধরেও টিকিট হয়েছে হাউসফুল । কিন্তু ডিজিটাল যুগের সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে সবকিছু । বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড ফোন, 4-জি নেট স্পীড ও ওটিটি-র দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে সিনেমা হল(Condition of Cinema Halls in OTT Platform Era)৷ সময় নষ্ট করে কেউ খুব একটা হল মুখী হচ্ছে না ।
আরও পড়ুন :গত হয়েছে ম্যাটিনি-ইভনিং-নাইট, মনকেমনের সাক্ষী রবীন্দ্র স্মৃতিধন্য চণ্ডীদাস চিত্র মন্দির
পশ্চিম মেদিনীপুরের(Paschim Medinipur)15টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ঘাটাল, মেদিনীপুর ও খড়গপুর এই তিনটি ডিভিশনে 10-12টি করে বড় সিনেমা হল ছিল । এর পাশাপাশি ছোট মিনি পর্দার ভিডিয়ো হলও ছিল খান দশেক । কিন্তু তা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যেতে থাকে ৷ তবে এত কিছুর মধ্যেও সেই 1947 সাল থেকে শুরু হওয়া হরি সিনেমা হল(Hari Cinema Hall)আজও কোনওক্রমে টিকিয়ে রেখেছে তাদের অস্তিত্ব । কোনওক্রমে ভর্তুকি দিয়েই হল চলছে একপ্রকার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে । কর্মীরা চাইছেন সরকারি সাহায্য ।