ফুলপাহাড়ি, 1 মে : করোনা পরিস্থিতিতে সমাজ থেকে পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর লোধা শবর পরিবারের ছেলেমেয়েদের জন্য এগিয়ে এলেন কয়েকজন উদ্যোগী তরুণ গবেষক ও শিক্ষক-শিক্ষিকা (Studying for Lodha Sabar Community) । গত 6 মাস ধরে এলাকায় দিচ্ছেন 11 টাকায় শিক্ষাদান । পড়াশোনার পাশাপাশি হাতেকলমে কারিগরি শিক্ষার পাঠদানও চলছে । সহযোগিতায় ডঃ আম্বেদকর সোসাইটি ফর সোশ্যাল ইকোনমিক ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট ৷
কয়েকজন গবেষক ও শিক্ষকের উদ্যোগে শুরু হয়েছে 11 টাকার পাঠশালা ৷ তাও আবার জঙ্গলমহল মেদিনীপুরে ৷ পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে নাম রয়েছে জঙ্গলমহলের । এখানে রয়েছে লোধা-শবর আদিবাসী মাহাতো, কুড়মী-সহ অনগ্রসর জাতিভুক্ত মানুষজন ৷ যাঁদের সংখ্যাটা বেশি এবং তাঁদের পারিবারিক আয় এতই কম যে, নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা । শহরের ফুলপাহাড়ি এলাকায় বেশিরভাগ মেয়ের হাইস্কুলে উঠতে না উঠতেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় । ছেলেদের স্কুল শেষ হতে না হতেই চলে যেতে হয় দিনমজুর খাটতে । কারণ সংসারে আর্থিক অনটন। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ লোকের বাড়িতে কাজ করেন ৷ কেউ বা চাষের জমিতে মজুর, আবার কেউ বাড়ি তৈরির কাজ করেন ৷ এমন পরিবারে স্কুলের পাশাপাশি টিউশনি দেওয়া একটা বিলাসিতা ।
আরও পড়ুন :Bengal Civic Polls 2022 : প্রচারে বেরিয়ে শিক্ষাদান, অভিনব জনসংযোগ তৃণমূল প্রার্থী তথা অধ্যাপকের
এই পিছিয়ে পড়া লোধা শবর মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন কয়েকজন তরুণ উদ্যোগী গবেষক ও শিক্ষক । তাঁরা শুরু করলেন 11 টাকার বিনিময়ে সুলভ পাঠশালা । প্রতিদিনই দু'বেলা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ কৌশিক, সম্রাট, দেবারতি, বিশ্বজিৎ, সৌরভ, নির্মলেন্দু, গুনগুন নামে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তত্ত্বাবধানে চলছে এই পাঠশালা । এলাকার কচিকাঁচাদের নিয়ে গাছের ছায়ায় বসে পাঠদান করছেন উৎসাহী যুবকরা । শুধু হাতে-কলমে শিক্ষাদান নয়, তার সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক এবং মানসিক বিকাশের পাঠদানও করছেন তাঁরা । পড়াশোনার সঙ্গেই রয়েছে যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং মানসিক বিকাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক খেলার পাঠদান ৷ সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা, বিউটিসিয়ান কোর্স, কম্পিউটার শেখানো, ছবি আঁকা, আবৃত্তি, দাবা প্রশিক্ষণ ৷ আর এই সব শিক্ষা দিচ্ছেন এই শিক্ষক-শিক্ষিকারা । যাঁদের মূল উদ্দেশ্যই হল সমাজের পিছিয়ে পড়া এই মানুষজনের মধ্যে শিক্ষার প্রভাব বিস্তার করা এবং এলাকার স্কুলছুট বাচ্চাদের পড়াশোনায় আওতায় আনা ৷