চন্দ্রকোনা, 10 মে: বিয়েবাড়ি উপলক্ষে বাড়িতে সাজো-সাজো রব, গায়েহলুদ পর্বও শেষ ৷ আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা, তারপরেই আসবে বর ৷ বিয়ের পিঁড়িতে বসবে নববধূ। কিন্তু সে গুড়ে বালি ৷ মেয়ের সাবালিকা হতে এখনও দু'মাস বাকি ৷ তাই বিয়ের ঠিক আগে ছাদনাতলায় পৌঁছে বিয়ে বন্ধ করলেন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। এমনই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা 1 নম্বর ব্লকের।
জানা গিয়েছে, নাবালিকার বাবা পেশায় কৃষক ৷ বুধবার বাড়িতেই মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু নাবালিকা মেয়ের বিয়ের খবর পৌঁছে যায় চন্দ্রকোনা 1 নম্বর ব্লকের বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারীর কাছে। বিডিও'র নির্দেশে চন্দ্রকোনা 1 নম্বর ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক ও চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ, পৌঁছে যান নাবালিকার বাড়িতে। তাঁরা সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখেন। তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী নাবালিকা-সাবালিকা হতে এখনও দুই মাস বাকি আছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করলেন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা।
ওই নাবালিকার পরিবারের সকল সদস্যকে বুঝিয়ে তাঁদের মুচলেকা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেন তাঁরা। এমনকী পরিবারের সদস্যদের প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়, সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না-করে নাবালিকার বিয়ের ব্যবস্থা করলে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। সম্প্রতি ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক নাবালিকা বিয়ের আয়োজনের ঘটনা সামনে আসে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন খবর পেয়ে তা বন্ধের উদ্যোগ নেয়।
আরও পড়ুন:সাবাশ! নিজের বিয়ে বন্ধ করতে পঞ্চায়েতে দৌড়ল নাবালিকা
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে বিশেষ করে ছাত্রীদের কথা ভেবে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী-সহ সরকারের একাধিক প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা কমার জায়গায় ক্রমশ বেড়ে চলেছে জেলার ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনায়। সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্কুলে স্কুলে কন্যাশ্রী থেকে বন্ধু ক্লাব তৈরি করে নাবালিকা বিয়ে ঠেকাতে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা যে কেবল নামমাত্র, তা গত কয়েকদিনে প্রশাসনের একাধিক নাবালিকা বিয়ে বন্ধের মতো ঘটনায় স্পষ্ট। এনিয়ে উদ্বিগ্ন ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনও।