চন্দ্রযানের সাফল্যে নাম উঠেছে রানিগঞ্জের যুবকের রানিগঞ্জ, 25 অগস্ট: চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান 3 এর ল্যান্ডার 'বিক্রম'য়ের সফল অবতরণের নেপথ্যে কৃতী বাঙালি বিজ্ঞানীদের তালিকায় এবার নাম উঠে এল রানিগঞ্জের এক যুবকের ৷ সানি মিত্র নামে এই যুবক ইসরোতে কর্মরত । তাঁর পরিবারের দাবি, চন্দ্রযান 3 এর ইঞ্জিনের দায়িত্বে যে টিম ছিল সেই দলেওই ছিলেন সানি ৷ এক ভিডিয়ো বার্তায় সানিও মহাকাশ বিজ্ঞানে ভারতের এই সাফল্যে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ৷ তিনি জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-2 এর ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার নিখুঁত পরিকল্পনা ও প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে এগিয়ে ছিল ইসরো ৷ ফলে সাফল্য এসেছে ৷
রানিগঞ্জের ডালপট্টি মোড়ে ছোটে লাল মাড়ওয়ারি লেনের বাড়িতে থাকে সানি মিত্রর পরিবার । বাবা শঙ্কর মিত্র ট্রানসপোর্ট ব্যবসায়ী । মা মুনমুন মিত্র গৃহবধু । বাড়িতে শয্যাশায়ী ঠাকুমা যুথিকা মিত্র । চন্দ্রযান 3-এর এই সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই এই তরুণ বিজ্ঞানীর পরিবারের সবাই খুশি । এই সাফল্যের সঙ্গে যেহেতু জড়িয়ে রয়েছে তাদের পরিবারের ছেলের নাম, তাই চন্দ্রযান অবতরণের দিন টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিলেন সকলে ৷ সবাই দুরুদুরু বুকে কামনা করেছেন, চন্দ্রযান-2 এর ব্যর্থতা সরিয়ে এবার যেন সফল হয় ভারতের এই চন্দ্রাভিযান ।
সানি মিত্রর বাবা শংকর মিত্র তাঁর ছেলে সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, "ছোট থেকেই আমার ছেলে মেধাবী । প্রথমে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়াশোনা, পরবর্তীকালে দুর্গাপুরের হেমশিলা মডেল স্কুলে পড়েছে সানি মিত্র এবং তারপর খড়গপুর আইআইটিতে সুযোগ । সেখান থেকেই ইসরোতে চাকরির সুযোগ আসে । এর আগে চন্দ্রযান 2 এর অবতরণের সময়ও সানি দায়িত্বে ছিল ।"
আরও পড়ুন: ছোট্ট সোনা বিজ্ঞানী হয়ে গেল, কৌশিকের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ‘রত্নগর্ভা’ মা
ইসরো ও ছেলের সাফল্যে খুশি সানির মা মুনমুন মিত্রও ৷ তিনি বলেন, "ছেলে ছোট থেকে শান্ত । তবে তার ইচ্ছে ছিল স্পেস সেন্টারে কাজ করার । সেই স্বপ্ন তাঁর সফল হয়েছে, আমরা খুব খুশি । তবে এবারের অবতরণ নিয়ে আমরা খুব চিন্তায় ছিলাম । যাক শেষ পর্যন্ত দেশ সফল হয়েছে । এটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় খুশির খবর ।" বাড়িতে শয্যাশায়ী সানি মিত্রর ঠাকুমা যুথিকা মিত্র । আনন্দে বারবার তাঁর চোখ ভিজে যাচ্ছে । তিনি জানালেন, 14 বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন । তখনই তিনি সানিকে আশীর্বাদ করে দিয়ে গিয়েছিলেন, নাতি একদিন অনেক বড় হবে । আজ নাতির এই সাফল্যে তিনিও খুশি ৷
আরও পড়ুন: চন্দ্রযান 3-এর সাফল্যে বড় অবদান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের
অন্যদিকে, শ্রীহরিকোটা থেকে ভিডিও বার্তায় সানি মিত্র বলেন, "এই সকলের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্মরণ রাখা উচিত চন্দ্রযান 2 এর কথা । শেষ মুহূর্তে আমরা সিগনাল হারিয়ে ফেলেছিলাম । সেই ভয়টাতো এবার ছিলই । কিন্তু এবারের এত সুন্দর পরিকল্পনা এবং সমস্ত টিম ওয়ার্ক এত সুন্দর ভাবে হয়েছে, যার দরুণ যে আমরা সফল হয়েছি । এই সফলতা এসেছে গোটা দেশের মানুষের শুভ কামনায় ।" অন্যদিকে, আসানসোল এজি চার্চ স্কুলের 1994 সালের ব্যাচের ছাত্রী রিমা ঘোষের নাম উঠে এসেছে চন্দ্রযান-3 এর সাফল্যে । তিনিও চন্দ্রযান 3 এর দায়িত্বে ছিলেন একজন বিজ্ঞানী হিসেবে । আসানসোলে তাঁর ছবি দিয়ে শুভেচ্ছার বন্যা বয়ে যাচ্ছে । স্কুলের দিদিমনিরাও গর্বিত প্রাক্তন এই ছাত্রীর সাফল্যে । যদিও রিমা ঘোষ বা তাঁর পরিবারের সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি ।