পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

খনিতে আত্মসুরক্ষার জন্য রাখা মেশিন খারাপ! আতঙ্ক ছড়াচ্ছে শ্রমিক মহলে - আসানসোল

রেসকিউ টিম সূত্রে জানা গেছে একেকটি মেশিনের দাম 30000 টাকার উপরে । মেশিনটি একবার খুলে দিলে আর দ্বিতীয়বার ব্যবহার করার যোগ্য থাকে না । অর্থাৎ "ইউজ় এন্ড থ্রো" এই মেশিন গুলি পরীক্ষা করে দেখার কোন উপায় নেই যে সেগুলো ঠিক আছে কিনা । সোমবার কয়েক মিনিটের মধ্যে 5 টি মেশিন খোলা হয় । 5টিই খারাপ ছিল ৷ প্রশ্ন উঠছে এমন ধরনের মেশিন সুরক্ষার ক্ষেত্রে কেন ব্যবহার করা হবে? হতাশ রেসকিউ টিমের সদস্যরাও ।

mine

By

Published : Oct 15, 2019, 4:30 PM IST

আসানসোল, 15 অক্টোবর : ECL-র মাইন্স রেসকিউ টিমের ছোটো অক্সিজেন সরবরাহকারী সব যন্ত্রই খারাপ । যার ফলে কুলটির আলডি গ্রামে বেআইনি খাদানে আটকে পড়া লোকেদের উদ্ধারকাজ থামিয়ে দিতে হয় মাঝ পথে ৷ বাধ্য হয়েই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হয় ECL-র মাইনস রেসকিউ টিমকে । স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে পরপর ECL সমস্ত যন্ত্রাংশ খারাপ হয় কী করে? দুর্ঘটনা যদি ECL-র বৈধ খনিতে ঘটত তাহলে কী হত? যেখানে সুরক্ষাই প্রধান , সেখানে আত্মসুরক্ষার জন্য আনা সব যন্ত্র খারাপ? রেসকিউ টিমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যাদের কাছ থেকে যন্ত্রগুলি কেনা হয়েছিল তাদের অভিযোগ জানানো হবে ।

রবিবার বিকেলে কুলটির আলডি গ্রামের পিছনে একটি বেআইনি কয়লা খাদানে কয়লা কাটতে গিয়ে খাদানের ভিতরে বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে পড়ে তিনজন । তাদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ৷ ECL-র অনুমান তারা কেউ আর বেঁচে নেই । রবিবার রাতে ECL-র মাইনস রেসকিউ টিম আলডি গ্রামে যায় । কিন্তু খাদানের মুখ সরু থাকায় আর খাদান বিষাক্ত গ্যাসে পূর্ণ থাকায় মাইনস রেসকিউ টিম ভিতরে যেতে পারেনি ।

সোমবার দুপুরে ফের রেসকিউ টিম আলডি গ্রামে আসে । বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে খাদানে ঢোকার চেষ্টা করে ৷ কিন্তু খাদানের মুখ অপরিসর হওয়ায় তারা ব্যর্থ হয় । পুনরায় তারা ছোটো অক্সিজেন সরবারাহ মেশিন নিয়ে খাদানে ঢোকার চেষ্টা করে । তারা মোট পাঁচটি মেশিন নিয়ে এসেছিল । কিন্তু সব মেশিনগুলিই খারাপ হয়ে যায় ৷ জানা গেছে, মেশিনটির নাম সেল্ফ কন্টেনার সেল্ফ রেসকিউয়ার ৷ ছোটো এই মেশিনগুলো মূলত কোলিয়ারিতে রাখা থাকে আত্মসুরক্ষার জন্য ।

কখনও যদি খনির ভেতরে কোনও শ্রমিক অক্সিজেনের অভাব অনুভব করেন কিংবা কেউ আটকে পড়েন, তখন এই মেশিনের সাহায্য নেওয়া হয় ৷ মেশিনগুলি একবারই ব্যবহার করা যায় । তিন থেকে চার ঘণ্টা এই মেশিনগুলি অক্সিজেন দিতে পারে বলে মাইনস রেসকিউ অফিসাররা জানিয়েছেন । মেশিনের সঙ্গে একটি বড় টিউব থাকে যে টিউবটি নাকে লাগিয়ে নিয়ে নিতে হয় । কিন্তু টিউব এত গরম হয়ে যাচ্ছিল যে তা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছিল না ।

রেসকিউ টিম সূত্রে জানা গেছে, একেকটি মেশিনের দাম 30 হাজার টাকার উপরে । মেশিনটি একবার খুলে দিলে আর দ্বিতীয়বার ব্যবহার করার যোগ্য থাকে না । অর্থাৎ "ইউজ় এন্ড থ্রো" এই মেশিনগুলি পরীক্ষা করে দেখার কোনও উপায় নেই যে সেগুলো ঠিক আছে কি না । সোমবার কয়েক মিনিটের মধ্যে 5টি মেশিন খোলা হয় । 5টিই খারাপ ছিল ৷ প্রশ্ন উঠছে এমন ধরনের মেশিন সুরক্ষার ক্ষেত্রে কেন ব্যবহার করা হবে? হতাশ রেসকিউ টিমের সদস্যরাও ।

ক্যামেরার সামনে সরাসরি না বলতে চাইলেও তাঁদের নিজেদের মধ্যে আলোচনাই বুঝিয়ে দেয় যে খনিতে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটলে এই মেশিন নিয়ে গেলে বিপদের অন্ত থাকবে না । খনিতে প্রাণ হাতে করে নামতে হয় শ্রমিকদের ৷ সেখানে পর পর মেশিন খারাপ থাকায় হওয়ায় শ্রমিক মহলে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে ।

অবৈধ কয়লা খাদানে কয়লা চুরি করতে গিয়ে মানুষ ভেতরে আটকে পড়ায়, সেখান থেকে যত সহজে মাইনস রেসকিউ টিম তাদের দায়িত্ব ছেড়ে চলে যেতে পারল, ECL-র বৈধ কোনও খনিতে যদি শ্রমিকরা এভাবে আটকে পড়ত তাহলে তারা কী করত সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
মাইনস রেসকিউ টিমের ব্রিগেড মেম্বার অশোক রায় বলেন, " অপরিসর জায়গায় আমরা ঢুকতে পারব না । খনি মুখ পরিষ্কার হলেই বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে আমরা ভিতরে ঢুকে দেহগুলি বের করার চেষ্টা করতাম । "

ABOUT THE AUTHOR

...view details